পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮০
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

 এই ভাষার শক্তি এবং সৌন্দর্যকে অস্বীকার করবার উপায় নেই।

 উত্তর ভারতের অন্যান্য প্রাদেশিক সাহিত্য সম্বন্ধে আমরা যা’ও বা জানি, দক্ষিণ ভারতের সম্বন্ধে তা’ও জানি না। দাক্ষিণাত্যে প্রধানতঃ চারটি ভাষা চলে, কর্ণাটকে কানাড়ী, অন্ধ্রদেশে তেলুগু, তার দক্ষিণে তামিল দেশে তামিল এবং তারও দক্ষিণে, ভারতের দক্ষিণতম প্রান্তে কেরল দেশে মালয়ালম্। এর মধ্যে কর্ণাট এবং অন্ধ্রের সঙ্গে প্রাচীন যুগে বিশেষ ক’রে পাল এবং সেন রাজাদের আমলে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল। পাল রাজাদের অনেক রাণী কর্ণাট এবং অন্ধ্র থেকে এসেছেন, সেন রাজারা তো জাতেই কর্ণাটী ছিলেন। কর্ণাটকের সুদূর অতীতের সাহিত্য সম্বন্ধে আমরা বেশী কিছু জানি না, তবে সংস্কৃতে বিখ্যাত নারী কবিদের মধ্যে বহু কর্ণাটী নারীর নাম পাওয়া যায়। দাক্ষিণাত্যের ভাষাগুলিতে সংস্কৃত প্রভাব পরবর্তী যুগে পড়লেও সেগুলি মূলতঃ দ্রাবিড় ভাষা, সুতরাং উত্তর ভারতের সংস্কৃতমূলক ভাষাগুলির চেয়ে তাদের ইতিহাস অনেক পুরাতন,—একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। সংস্কৃত কবিদের সমসাময়িক যে সব কর্ণাটী নারী কবি কানাড়ী ভাষায় সাহিত্যচর্চা করেছিলেন, দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁদের নাম আমরা জানি না। মহিসুরে দ্বাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে হয়শালারাজ বিষ্ণুবর্ধনের মহিষী শান্তলা দেবী (নটন সরস্বতী) বেলুড়ে কেশব স্বামীর মন্দিরে দেবতার প্রীত্যর্থে প্রতিদিন গান গেয়ে নৃত্য করতেন। তাঁর নৃত্যের খ্যাতি আজও তাঁর স্বদেশে লুপ্ত হয়নি, কিন্তু তাঁর স্বরচিত গানগুলি আজ আর পাবার উপায় নেই। শান্তলার স্বামী মহারাজ বিষ্ণু