পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
১৮৩

তাঁর বহু রচনা এখনও পাওয়া যায়। এক জায়গায় তিনি বলেছেন:

“প্রভু আমাদের স্বর্গে আছেন কেহ বা বলে;
তিনি মহাদেব, দেবরাজ তিনি দেবতা দলে।
বিশ্বভুবন করিছে শাসন যে ভগবান,
আমি জানি তিনি আমারি বক্ষে বিরাজমান॥”[১]

 এমনি সরল দ্বিধাহীন ভাষায় তিনি অনেক বড়ো বড়ো ধর্মের কথা, জ্ঞানের কথা বলে গেছেন, যা চিরপুরাতন হ’য়েও চিরনূতন, দুই সহস্র বৎসরেও যার মূল্য কমে নি। অতি প্রাচীন যুগে দক্ষিণ ভারতে সুপণ্ডিত এবং সু-কবিদের একটি সমিতি ছিল, তার নাম ছিল ‘সঙ্গম’ বা সঙ্ঘ। এই বিদ্বন্মণ্ডলীর সভায় সমসাময়িক প্রত্যেক লেখক-লেখিকাকে তাঁদের লেখা বিচারের জন্য দিতে হ’ত। লেখা যোগ্য বিবেচিত হ’লে গ্রন্থে সঙ্গম্‌স্বীকৃতির ছাপ দেওয়া হ’ত, খুব বেশী ভালো লেখা হ’লে কবিকে মণ্ডলীতে স্থান দেওয়া হ’ত। কয়েক হাজার বছর ধরে এই ‘সঙ্গম’গুলি দক্ষিণী সাহিত্যকে নিয়ন্ত্রিত করেছে, তার বাছাই করা রত্নগুলিকে কাব্যসংগ্রহের মধ্যে স্থান দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে। বলা বাহুল্য অম্মৈয়ারের লেখাগুলি সঙ্গমের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিল এবং সঙ্গমের কৃপাতেই সেগুলি দীর্ঘজীবন লাভ করেছে।

 এর পর ত্রয়োদশ শতাব্দীতে একজন সুকবির নাম পাওয়া যায়, তিনি বালবিধবা কুপ্পামাম্বা’। বালবিধবার জীবনে স্বভাবতঃই দুঃখ আছে, তার ওপর সমাজের অবিচার তাঁর মর্মবেদনাকে শতগুণে বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাঁর গানগুলিতে


  1. ভাবানুবাদক শ্রীপ্রভাতমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়।