পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
১৮৫

সুপ্রসিদ্ধাই আছেন, আর একজন জীবিতকালে বহু খ্যাতি লাভ করলেও আজ সে খ্যাতি নামমাত্রে পর্যবসিত। এঁদের মধ্যে একজনের নাম ‘মোল্লা’ আর একজনের নাম ‘মোহনাঙ্গী’। নেলোর জেলায় গোপবরম্ গ্রামে এক দরিদ্র কুম্ভকার পরিবারে ‘মোল্লার’ জন্ম। ছোটোবেলা থেকে তিনি ছিলেন কল্পনাবিলাসিনী। সঙ্গিনীদের নিয়ে পৌরাণিক নাটক অভিনয় করায় ছিল তাঁর সব চেয়ে আনন্দ। নিজের চেষ্টায় লেখাপড়া শিখে তিনি সংস্কৃত রামায়ণ পড়েন এবং রামায়ণের রসধারা তাঁর দরিদ্র অশিক্ষিত দেশবাসীকে পরিবেশন করবার জন্য তাঁর চিত্ত ব্যাকুল হ’য়ে ওঠে। দরিদ্রের সংসারে অবসরের একান্ত অভাব, প্রতিদিন স্নানের পর চুল শুকোতে গিয়ে তিনি যেটুকু সময় রোদে বসতে পেতেন, সেইটুকু সময় লেখনী-পরিচালনা ক’রে কবিতায় রামায়ণের মত মহাকাব্যের তেলুগু অনুবাদ শেষ করলেন। মোল্লার রামায়ণ সংস্কৃতের আক্ষরিক অনুবাদ নয়, তাঁর নিজের ভাষায় নিজের ভঙ্গীতে লেখা এক অপূর্ব সৃষ্টি। বিদেশী সমালোচকেরাও তাঁর প্রতিভাকে স্বীকার করেছেন। মোল্লার ভাষা সরল এবং মধুর, উপমা, ব্যঞ্জনা, বর্ণনাশক্তি সমস্তই তাঁর অসাধারণ শক্তিমত্তার পরিচায়ক। তেলুগু ভাষায় তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী লেখিকা আজও কেউ জন্মান নি, অন্ধ্রদেশের ঘরে ঘরে মোল্লার রামায়ণ আজও পঠিত হয়।

 ষোড়শ শতাব্দীর দ্বিতীয় বিখ্যাত লেখিকা ‘মোহনাঙ্গী’ মহারাজ কৃষ্ণদেব রায়ের কন্যা। স্নেহময় বিদ্যোৎসাহী পিতার চেষ্টায় তাঁর শিক্ষা সে যুগের পক্ষে যতদূর সম্ভব সম্পূর্ণতা লাভ করেছিল। বিদুষী রাজকন্যা ছিলেন রাজসভার ‘অষ্টদিগ্‌গজ’দের