পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৮
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

আজও বৈষ্ণব মহাগুরুদের মধ্যে অন্যতম ‘আলোয়ার’ (আলবার) রূপে তিনি পূজা পাচ্ছেন। অতি অল্প বয়সে প্রথম যৌবনে আণ্ডালের মৃত্যু হয়। লোকলজ্জায় তাঁর পিতা তাঁর বিবাহ দিতে বদ্ধপরিকর হলে অণ্ডাল দৃঢ়ভাবে বিবাহ করতে অস্বীকার করেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরই জয় হয়, কৃষ্ণার্পিত দেহ মন নিয়ে অন্য কোনো মানুষকে স্বামী বলে স্বীকার করা তিনি অসম্ভব বিবেচনা করায় স্বপ্নাদেশ অনুসারে তাঁকে শ্রীরঙ্গমের বিষ্ণুমন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়, সেইখানে জনশ্রুতি অনুসারে তিনি বিষ্ণুর দেহে বিলীন হয়ে যান। আণ্ডালের রচনার একটি নমুনা দিলাম:

‘‘কে কোথা শুনেছে কবে,   যাজ্ঞিকের যজ্ঞহবি
ভোগ ক’রে ফেরু মরুচারী?
যৌবনপুস্পিত মোর  এই অনিন্দিত তনু
রাখিয়াছি পূজা লাগি তাঁরি।
শঙ্খচক্রধারী যিনি,  তিনি মোর প্রাণেশ্বর,
তাঁরে ছাড়ি পরিণয়-ডোরে
বন্দী হ’য়ে;—মর্ত নরে  আমারে ভজিতে হবে?
তার আগে মৃত্যু দাও মোরে!”

 বাঙালী মুসলিম নারীদের মধ্যে সাহিত্যিক ব’লে যাঁরা খ্যাতি লাভ করেছেন তাঁদের ভিতর “মতিচুর” রচয়িত্রী শ্রদ্ধেয়া রকেয়া হোসেনের নাম সর্বাগ্রে উল্লেখযোগ্য। এই বাঙালী নারীর সঙ্গে বিহারী রাজকর্মচারী সৈয়দ সখাওয়াৎ হোসেনের পরিণয় হয়েছিল। স্বামীর দেহান্তের পর ইনি দীর্ঘজীবন হিন্দু সতী নারীর মতই নৈষ্ঠিক ও কৃচ্ছ্র বৈধব্যব্রত পালন করেছিলেন।