পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

নারীপুরোহিতেরা দেবতার প্রতিনিধিরূপে সম্রাটদের প্রণতি গ্রহণ ক’রতেন এবং ভবিষ্যদ্বাণীর দ্বারা সমস্ত জাতির ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন তাঁদের বাণী আজ আমরা হারিয়ে ফেলেছি, কিন্তু ভারতের প্রাচীনতর যুগের বেদমন্ত্ররচয়িত্রীদের রচিত সাহিত্য আজও লুপ্ত হয়নি। প্রকৃতপক্ষে প্রাচীন ভারতের আরণ্যক সভ্যতার যুগে আমরা যে সমস্ত জ্ঞানজ্যোতিবিভাসিতা মহীয়সী মহিলাদের বেদমন্ত্ররচয়িত্রীরূপে দেখতে পাই, তাঁদের জগতের প্রথম নারীজাগরণের অগ্রদূত ব’ললে অত্যুক্তি হবে না। ঋগ্বেদের যুগে এইরকম সাতাশ জন ঋষিকবির পরিচয় আমরা পেয়েছি। তাঁদের নাম; ঘোষা, গোধা, বিশ্ববারা, অপালা, উপনিষৎ, নিষৎ, জুহু, অদিতি, ইন্দ্রাণী, ইন্দ্রমাতা, সরমা, রোমশা, উর্বশী, লোপামুদ্রা, নদীগণ, যমী, নারী, শাশ্বতী, শ্রী, লাক্ষা, সর্পরাজ্ঞী, বাক্, শ্রদ্ধা, মেধা, দক্ষিণা, সূর্যা, সাবিত্রী। বৃহদ্দেবতার এই তালিকার বাইরেও শচী, বসুত্রুজায়া প্রভৃতি নারীর রচিত বেদমন্ত্র ঋগ্বেদে এবং অন্যান্য বেদে পাওয়া যায়। সূর্যকন্যা সূর্যা, দেবমাতা অদিতি, কুক্কুরমাতা সরমা, ইন্দ্রপত্নী ইন্দ্রাণী সাপেদের রাণী সর্পরাজ্ঞী প্রমুখের লেখা পড়ে মনে হয়, তাঁরাও একদিন মানবীই ছিলেন, পরবর্তী যুগের মানুষ তাঁদের অতিরিক্ত সম্মান দেখাতে গিয়ে অকারণ দূরে ঠেলে দিয়েছে। যাঁদের মানবীত্বসম্বন্ধে দ্বিমত নেই তাঁদের মধ্যে কক্ষীবান-কন্যা ঘোষা, অত্রিকন্যা অপালা, বৃহস্পতিকন্যা রোমশা এবং অগস্ত্যপত্নী বিদর্ভরাজকন্যা লোপামুদ্রা ছাড়া বিশ্ববারা, শাশ্বতী এবং গোধানাম্নী বিভিন্ন ঋষিপত্নী এবং ঋষিকন্যার নাম উল্লেখযোগ্য। এঁরা বিভিন্ন প্রয়োজনে