পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

পথেই চলতে দিতেন। হারীতের মতে নারীর মধ্যে একদল ব্রহ্মবাদিনী, আর একদল সদ্যোবধু। ব্রহ্মবাদিনীরা উপনয়ন, অগ্নীন্ধন ও বেদাধ্যয়ন করবেন এবং আত্মীয়দের মধ্যে ভিক্ষাচর্যা করবেন, সদ্যোবধূদের বিয়ের সময় নামমাত্র উপনয়ন করিয়ে বিয়ে দিতে হবে। যমস্মৃতিতেও মেয়েদের মৌঞ্জীবন্ধন অর্থাৎ উপনয়নের কথা আছে, তাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁদের পিতা, পিতৃব্য এবং ভ্রাতার কাছে বেদ পড়তেন। সর্বত্র যে এ বিধি পালিত হ'তনা তার প্রমাণ পাই এর বহু পরবর্তী যুগে ভবভূতির লেখা ‘উত্তররাম চরিতে'। বাল্মীকি লবকুশকে এয়ী বিদ্যা শেখাচ্ছেন; তাঁরা অতিরিক্ত মেধাবী, এত তাড়াতাড়ি শিখছেন যে সহপাঠিনী আত্রেয়ী তাঁদের সঙ্গে সমান তালে চলতে পারছেন না, তাই তাঁকে অন্যত্র যেতে হচ্ছে। মালতীমাধবেও কামন্দকীর পুরুষের সঙ্গে সহাধ্যয়নের চিত্র পাই। তবু ভবভূতির যুগে নারীর অধিকার অনেক সঙ্কীর্ণ হয়েছে, বৈদিকযুগের স্ত্রীস্বাধীনতা তখন আর নেই। বৈদিক কর্মে ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্যের সঙ্গে নারীর যে সমান অধিকার কাত্যায়নস্রৌতসূত্রে স্বীকৃত হয়েছে, সে অধিকার তার বহু পূর্বেই সে হারিয়েছিল।

 পৌরাণিক যুগের প্রারম্ভে উপনিষদের ঊষায় আমরা কয়েক জন মহীয়সী নারীকে বিদেহরাজ জনকের রাজসভায় দেখতে পাই। সে যুগের সেই সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মমহাসভায় ভারতবিখ্যাত ঋষি ও পণ্ডিতমহামণ্ডলীর মধ্যে বালব্রহ্মচারিণী ক্ষত্রিয়া নারী সুলভা রাজর্ষি ধর্মধ্বজের সঙ্গে দার্শনিক বিচারে প্রবৃত্তা হয়েছিলেন। এই সুলভা একাকিনী পৃথিবী পরিভ্রমণ করেছিলেন, সর্ববেদ-