আমরা তোমার পূজা করি, তুমি আমাদের প্রতি দাও;— আমরা তোমাকে ডাকছি, তুমি আমাদের ডেকে নাও,[১] এই যজ্ঞে যে আশীর্বাদ চাইছি, তা সত্য হোক।[২]... অয়ি ইড়ে! তুমি আমাদের প্রিয়া, তুমি বিঘ্নঘাতিনী, কল্যাণদায়িনী, তুমি আমাদের প্রার্থনা পূর্ণ করো।”
উষা দেবীর আহবান-সঙ্গীতে গাম্ভীর্য এবং মাধুর্যের অপূর্ব সংমিশ্রণ দেখা যায়। কবি বর্ণনা করেছেন, কি ভাবে রাত্রিশেষে উষার আগমনে জীবজগৎ জেগে ওঠে। তাঁর প্রতি আগমনে জীব দিনে দিনে জরার দিকে এগিয়ে চলে, কিন্তু চিরযুবতী ঊষার সৌন্দর্যের বিন্দুমাত্র হানি হয় না। তাঁর রমণীয় কান্তি অন্ধকার দূর করে, তিনি জ্যোতি দিয়ে আকাশের দ্বার খুলে দেন। সুন্দরী যুবতীর মতো তিনি সূর্যের কাছে এসে দাঁড়ান। গৃহকর্ত্রী যেমন নিজে জেগে বাড়ীর সকলকে জাগিয়ে তোলেন, তেমনি উষা সকলের আগে জেগে জগতের সকলের চোখ থেকে ঘুমকে দূর করে দেন। তিনি একহাতে ফুলের কুঁড়ির পাপড়ি খুলে খুলে তাদের ফুটিয়ে তোলেন, আর এক হাতে মৌমাছিদের মধু খেতে আসবার জন্য ইঙ্গিতে আমন্ত্রণ জানান। কোথাও পৃথিবীর বন্দনায় ঋষি বলছেন: “আমি পৃথিবীর পুত্র,—এই ধরণী আমার মা!” কোথাও বর্ণনা করেছেন, “পৃথিবী এবং তাঁর দুহিতা দ্যুলোক ক্ষীরদায়িনী ধেনুর মতো অন্তরীক্ষে মিলিত হয়ে পরস্পরকে রসপান করাচ্ছেন।”[৩]