পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২৩৯

বাদ্গেবীর রচিত দেবীসূক্তে যে মহিমময়ী মূর্তি প্রত্যক্ষ করি, যিনি রুদ্রের ধনু বিস্তার ক'রে যুদ্ধ করেন, উর্দ্ধলোকে পিতা দৌকে যিনি প্রসব করেছেন, সমুদ্রের জলরাশির মধ্যে যার গর্ভ, বিশ্বভূবনে যিনি অনুপ্রবিষ্টা, দ্যুলোক স্পর্শ ক'রে যার দেহ উঠেছে, বিশ্বভুবন নির্মাণে প্রবৃত্ত হ'য়ে বায়ুর মত যিনি সর্বত্র প্রবহমান, ভূলোকে দ্যুলোকে সর্বত্র সর্বভূতে যিনি আপন মহিমায় বিরাজিতা, সেই মহাদেবীর মহাকল্পনা সুদূর অতীতের এক আর্যনারীর কীর্তি;—এ কথা স্মরণ করলে আজও আমরা গৌরব অনুভব না করে পারি না। ইড়া, ঊষা, ইন্দ্রাণী, সরমা, যমী, সাবিত্রী, সর্পরাজ্ঞী, সরণ্যু, প্রমুখ দেবী-অপদেবী ছাড়া বেদে মানবী-চরিত্রের বর্ণনাও বড় অল্প নেই। বেদরচয়িত্রী ব্রহ্মদিনীদের নাম আমরা অন্যত্র বলেছি, ঘোষা, অপালা, বিশ্ববারা, শাশ্বতী, লোপামুদ্রা, বাক্, শ্রদ্ধা, রোমশা প্রমুখ পার্থিব নারীর যে প্রত্যেকেই একদিন ভারতে সশরীরে বর্তমান ছিলেন, তার প্রমাণ তাঁদের রচিত বেদমন্ত্রগুলি। তাঁদের বর্ণনায় কবির কৃতিত্ব অল্প। বৃহদ্দেবতায় উক্ত সাতাশ জন ব্রহ্মবাদিনীর মধ্যে দেব-যোনি, সর্প-যো-ি, কুকুর-যোনি-ধারিণীও আছেন, তবে তাঁদের কথাবার্তায় আচার-আচরণে মনুষ্যসুলভ দোষগুণই প্রকাশ পেয়েছে, এমন কি অনেক ক্ষেত্রে মানুষের চেয়ে হীনতাও প্রকটিত হয়েছে। বেদের যুগে যে সব কাহিনী প্রচলিত ছিল, তাদের মধ্যে সত্যের সঙ্গে কল্পনা এমনভাবে মিশেছে যে, ওর মধ্যে অনেকগুলি চরিত্র বাস্তব না কাল্পনিক তা’ আজ জোর ক'রে বলা শক্ত। যেমন কদ্রূ-সুপর্ণীর বিবাদের গল্পে আমরা দেখি, পরাজিতা সুপর্ণীকে কদ্রূ এই