পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪০
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

শর্তে দাসীত্ব থেকে মুক্তি দেবেন যে, তার সন্তান তৃতীয় দ্যুলোক থেকে সোম নিয়ে আসবে। সুপর্ণীর কন্যা গায়ত্রী পক্ষীরূপে গিয়ে সোম আনলে, কৃশানু গন্ধর্বের বাণে ক্ষতবিক্ষত হ'য়েও ছাড়লেন না। তার্ক্ষ্য পক্ষী তাঁকে পথ দেখিয়ে নিয়ে এলেন। অন্যত্র দেখি গন্ধর্ব বিশ্বাবসু গায়ত্রীকে পথে আটকালেন, তখন সরস্বতী স্বয়ং গন্ধর্বদের ছলনা ক'রে সোম নিয়ে এলেন। পরবর্তী যুগে সুপর্ণী বিনতা, সোম অমৃত এবং তার্ক্ষ্য ও গায়ত্রী মিলে ‘গরুঢ়’ হয়েছেন, বলা বাহুল্য। শতপথব্রাহ্মণে উর্বশী পুরূরবার গল্প আমরা প্রথম পাই, মহাভারতের এবং কালিদাসের ‘বিক্রমোর্বশীর’ নায়ক-নায়িকার মূল রূপ এইখানেই পাওয়া যায়। অতীত ভারতের অন্যতম সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট ভরতের মাতা শকুন্তলার সঙ্গে দুষ্মন্তের প্রণয়কাহিনীও শতপথব্রাহ্মণে মেলে। দুষ্মন্তের মূল চরিত্র সত্যই ঘৃণ্য, অবোধ তাপস বালিকার সর্বনাশ সাধন ক'রে রাজ্যে ফিরে এসে তিনি যে কেবল সজ্ঞানে সভামধ্যে তা’ অস্বীকার করেছিলেন তাই নয়, সতী নারীকে অপমান করতেও কুণ্ঠিত হ'ননি। বৈদিক এবং পৌরাণিক শকুন্তলা ও কালিদাসের শকুন্তলার মতো শুধু মাধুর্যর প্রতিমূর্তি ‘ললিতলবঙ্গলতা’ জাতীয় নারী ছিলেন না, সভামধ্যে দৃপ্তস্বরে রাজাকে ধিক্কার দিয়ে তিনি স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। অবশ্য অভিজ্ঞান হারানোর কৈফিয়ৎ দিয়ে কালিদাস এঁদের দুজনের চরিত্রকেই যে সুন্দরতর করেছেন তাতে সন্দেহ নেই। কুকু বমাতা সরমা ইন্দ্রের দূতী হ'য়ে ‘পনিদের কাছ থেকে গরু আদায় করতে গেছেন, সূর্যকন্যা সূর্যার জন্য নাসত্য বা অশ্বিনীকুমারেরা দেবতাদের সঙ্গে বাজি রেখে সূর্য পর্যন্ত রথ