পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২৪১

ছোটাচ্ছেন, অর্চনানা ঋষির ছেলে শ্বাবাশ্ব যজ্ঞ করতে গিয়ে রথবীতি রাজার মেয়েকে দেখে প্রেমে পড়েছেন এবং সন্ন্যাসী হ'য়ে দেশে দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, মুদগল ঋষির গোধন শত্রুতে হরণ করতে এসেছে দেখে মুদগলপত্নী ইন্দ্রসেনা রথে চড়ে তাদের, আক্রমণ করে পরাজিত করছেন, লেখরাজপত্নী বিশপলার পা যুদ্ধক্ষেত্রে পাখীর পালকের মতো শক্রর অস্ত্রাঘাতে খসে যাচ্ছে, বিবাহরাত্রে ত্বষ্টার কন্যা সরণ্যু বিবাহসভা থেকে পালিয়েছেন, তার বদলে নকল ‘কন্যা’ দান ক'রে সুর্যকে ভোলানো হ'চ্ছে, এই রকম কতই না বিচিত্র চিত্র বৈদিক সাহিত্যে দেখা যায়। ঐ সবের মধ্যে শর্যতি রাজার মেয়ে সুকন্যার বিয়ের গল্পটি উল্লেখযোগ্য। আদরিণী রাজকন্যা তাঁর পিতার সঙ্গে মৃগয়ায় গেছেন, এদিক ওদিক ঘুরতে ঘুরতে এক বল্মীকস্তূপে লতাগুল্মের ফাঁকে দুটি চকচকে জিনিষ দেখে কৌতূহল বশে কাঠি দিয়ে খোঁচা মারলেন। ধ্যানস্থ চ্যবন ধ্যান ভঙ্গে সুকন্যাকে দেখছিলেন, তিনি অন্ধ হলেন। অনুতপ্তা রাজকন্যা অজ্ঞানকৃত অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ সেই অন্ধ বৃদ্ধ বনবাসীকে বিয়ে করে বনবাসিনী হ'য়ে রইলেন। অবশেষে অশ্বিদ্বয়ের পূজা করে তিনি স্বামীর দৃষ্টিশক্তি এবং যৌবন ফিরিয়ে এনেছিলেন। পরমরূপবান্ অশ্বিনীকুমারেরা তাঁকে পরীক্ষা করবার জন্য প্রলোভন দেখিয়েছিলেন, তাতে কালিদাসের উমার মতোই মহীয়সী সতী নারী ঘৃণাভরে তাঁদের দূর হয়ে যেতে বলেন, তাঁর অন্ধ কুরূপ বৃদ্ধ স্বামীর চেয়ে জগতে তাঁর কাছে কাম্য কেউ নেই, এই কথা দৃঢ়স্বরে ঘোষণা করেন। বৈদিক ও পৌরাণিক যুগের প্রথম দিকে এইরকম অনেকগুলি মহীয়সী নারী-চরিত্র আমরা দেখতে পাই। একদিকে কুষ্ঠ-

O.P. 92-31