পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫৪
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

গ্রীকরাজারা সসৈন্যে সমবেতভাবে ইলিয়াস আক্রমণ করেন, দীর্ঘকাল অবরোধ ও যুদ্ধের পর ছলনার সাহায্যে ট্রয় ধ্বংস ক'রে মিনিলাস হেলেনকে উদ্ধার করেন। ইলিয়াসের যুদ্ধ ঐতিহাসিক ঘটনা, তার ধ্বংসাবশেষ আজও দেখা যায়; হেলেনও নিঃসন্দেহ ঐতিহাসিক চরিত্র, তবে বাস্তবের ওপর কল্পনার রং যে চড়েনি একথা বলা চলে না। হোমারের ‘ইলিয়াড’ কাব্যকে প্রায়শঃই রামায়ণ এবং মহাভারতের সঙ্গে তুলনা করা হয়, কিন্তু এদের মধ্যে আকাশ-পাতালের মতই প্রচণ্ড প্রভেদ। ইলিয়াডে যুধ্যমান উভয় পক্ষে সাহায্যকারী দেবদেবীদের প্রচুর সংখ্যক দেখতে পাই, যোদ্ধাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন দেব বা দেবীপুত্র এবং দেবানুগৃহীত ব্যক্তিবর্গ। রামায়ণের সঙ্গে ‘ইলিয়াডে'র মিল যৎসামান্য, অমিলটাই প্রকাণ্ড। রামায়ণে এক সত্যসন্ধ মহাত্যাগী রাজকুমার তাঁর সাধ্বী-পত্নীর উদ্ধারের জন্য রাক্ষসপুরী ধ্বংস করেছেন, আবার সেই লক্ষ্মীস্বরূপা পুণ্যবতী নারীকে লোকাপবাদের ভয়ে বারম্বার প্রত্যাখ্যান করেছেন, এমন কি নিরপরাধিনী জেনেও অসহায় অবস্থায় লোকাপবাদে তাঁকে বর্জন করতেও বাধ্য হয়েছেন। ইলিয়াডে এক দুশ্চরিত্রা স্বেচ্ছাচারিণীর জন্য গ্রীকরাজারা ইলিয়াস বিধ্বংস করেছেন, হেলেন প্রথমে প্যারিসকে, তারপর তাঁর মৃত্যু হ'লে ডিইফোবাসকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীরূপে বাস করেছেন, তারপর যখন গ্রীকপক্ষের জয় নিশ্চিত বুঝেছেন, তখন ডিইফোবাসকে বিশ্বাসঘাতকতা পূর্বক ধরিয়ে দিয়ে নিজে নিরীহ নির্দোষী সেজে স্বামীর ক্ষমা লাভ করেছেন এবং অবশিষ্ট জীবন তাঁর সঙ্গে মুখে স্বচ্ছন্দ্যে কাটিয়ে গেছেন। আদর্শ বটে। গ্রীক পক্ষের প্রধান