পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২৫৫

বীর একিলিস একটি রূপসী বন্দিনীকে না পেয়ে অভিমান করে যুদ্ধ ছেড়ে বসে আছেন এ দৃশ্যও দেখা যায়। এই কাহিনীর সঙ্গে রামায়ণের একত্র নাম করতেও আমরা লজ্জিত হই। মিনিলাসের ভাই গ্রীকপক্ষের প্রধান সেনাপতি আগামেমনন যুদ্ধজয়ের পর দেশে ফিরে দুশ্চরিত্রা পত্নী ক্লিটেমনেষ্ট্রার হাতে প্রাণ হারান, আবার ওডিসিউসের সাধ্বী পত্নী ‘পেনিলোপি' দীর্ঘ বিশবৎসর ধ'রে সহস্র প্রলোভন এবং দুর্দ্দান্ত পাণিপ্রার্থীদের উন্মত্ত আবেদন অগ্রাহ্য করে স্বামীর পথ চেয়ে আছেন! এই রকম ভালো মন্দ শত সহস্র ছোটো বড়ো বাস্তব এবং কল্পিতচরিত্র গ্রীকপুরাণ এবং প্রাচীন গ্রীকসাহিত্যে দেখতে পাই। প্রমিথিউস মানবের কল্যাণের জন্য স্বর্গ থেকে অগ্নিকে চুরি করে মর্ত্তে নিয়ে এলেন, প্রতিহিংসাপরায়ণ দেবরাজ মানুষকে শাস্তি দেবার জন্য সৃষ্টির প্রথম নারী ‘প্যাণ্ডোরাকে পাঠালেন সর্বগুণান্বিতা সুন্দরী রূপে। ‘এপিমিথিউসে’র অনুরোধে প্যাণ্ডোরা তাঁর পাণিগ্রহণ করলে তাঁর সঙ্গের দেবদত্ত যৌতুকের পেটিকাটি খোলা হ'ল। জগতের যত কিছু রোগ, শোক, ঘৃণা, বিদ্বেষ, লোভ, মোহ তার ভিতর সঞ্চিত হয়েছিল, বেরিয়ে এসেই দেখতে দেখতে চারিদিক ছড়িয়ে পড়ল। বাক্সর তলায় একমাত্র পড়ে রইল আশা, তার মাধুর্য্য দিয়ে মানুষের দুঃখ-কষ্ট একটুখানি লাঘব করবার জন্য। প্রাচীন গ্রীসের ভ্রাতৃ-প্রেমের আদর্শ দেখা যায় রাজকন্যা আণ্টিগনির মধ্যে। রাজরোষ উপেক্ষা করে তিনি ভাই পালিনিসিসকে কবর দিয়েছিলেন, সেজন্য তাঁকে জীবন্ত সমাহিত হ'তে হয়। গ্রীকপুরাণে সপত্নীপুত্রকে হত্যার জন্য থিসিউস-পত্নীর তার নামে কুৎসিত কলঙ্ক আরোপ,