পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২৬১

জানি না, আরবের প্রাচীন কবি ‘খানশা’র মতো খ্যাতিলাভ অন্ততঃ তাঁরা কেউ করেন নি। ‘রাবেয়া'র পরে বহু সুপণ্ডিতা ধর্মজ্ঞা নারী পারস্যে দেখা দিয়েছিলেন, তাঁদের নামও এখানে দেওয়া গেল না। আধুনিক লেখিকাদের মধ্যে যাঁরা সবচেয়ে বেশী খ্যাতিলাভ করেছেন তাঁদের নাম ‘পারবীন খানুম এ'তে শামী’ এবং ‘ফজলেবাহার খানুম ইরান-উদ্দৌলা’ তাঁর কবি নাম 'জান্নৎ। শামীর ভাষা সরল এবং ভাব সহজবোধ্য, ফজলেবাহার বা ‘জান্নতের গজলগুলিতে মধ্যযুগের মরমীয়া সাধকদের অন্তগূঢ় প্রকাশভঙ্গী একদিক দিয়ে সেগুলিকে যেমন মর্মস্পর্শী করেছে, অপর দিকে সাধারণের পক্ষে সেগুলিকে খানিকটা দুষ্পাচ্য করেছে। দু’জনের লেখা থেকে দু’টি নমুনা দে'ব। শামীর লেখাটি স্থিরবুদ্ধি এবং চিন্তাশীলতার পরিচায়ক:

শামী—

“জানো কি তোমরা—নারী ও পুরুষ—কার কি কাজের ভার?
একজন এর তরণী, বন্ধু, অপরে কর্ণধার।
কাণ্ডারী যদি হয় হুঁশিয়ার, তরী যদি দৃঢ় হয়,
ঝঞ্ঝাতুফানে জলাবর্তেতে বলো তবে কিবা ভয়?
কালসমুদ্রে উঠুক ঊর্মি,—কি করিবে, এরা দোঁহে,
নিজ নিজ কাজ, যদি করে আজ অবিচল আগ্রহে?
আজ যে কন্যা—সেই হবে জেনো আগামী দিনের মাতা।
সুসন্তানের মহিমা-সৌধ জননীরই হাতে গাঁথা।”

জান্নৎ—

“একদা প্রভাতে বুলবুল, কাঁদি’ কহিল মোরে,
যদি বসন্ত এসে থাকে আজি ভুবন ভ'রে,—