পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৪
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

হয়ে জীবিকার্জনের জন্য পুরুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতা ক্ষেত্রে দাঁড়াতে দিতে একান্তই নারাজ! পিতা পতি পুত্র ব্যতিরেকেও আত্মীয়েরা এই জন্যই তাঁদের ভরণভার গ্রহণ করতে আইনতঃ বাধ্য। নারীকে এত মর্যাদা অন্য কোন সমাজ কোনদিন দেয়নি। চীনে জাপানে ইউরোপে প্রাচীন রোমে গ্রীসে বিশেষ করে ইংলণ্ডে নারী বহুস্থানে অমর্যাদার মধ্যেই এই সেদিন পর্যন্ত আইনতঃ বদ্ধ ছিল। কোথাও পুরুষের সম্পত্তিরূপে, কোথাও তার অধীনা সেবিকারূপে। আবার কোন কোন সমাজের ধর্মগুরু নারীর পৃথক্‌ আত্মা আছে বলেই স্বীকার করেন না।

 বৌদ্ধনিরসনকারী কুমারিল ভট্টই ‘অহল্যা’ ‘দ্রৌপদী' 'কুন্তী’ প্রভৃতি সম্বন্ধীয় অস্বাভাবিক অনার্যোচিত পরিস্থিতির প্রকৃত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রচার করে নারীমর্যাদার কলঙ্ক মোচন করেছিলেন। বুদ্ধ সাধারণত নারীবিদ্বেষী বলে প্রখ্যাত হলেও নারীকে ধর্মরাজ্যে সমানাধিকার দিয়ে শ্রমণী ভিক্ষুণীরূপে বহু মহীয়সী নারীর দীক্ষিত হ’বার সহায়তা তিনি করেছিলেন। মহম্মদও নারীকে নিজের আত্মার মত ভালবাসতে নির্দেশ দিয়েছেন। যিশু, নর-নারীকে পৃথক করেননি, বৌদ্ধবাদের মধ্যেও বহু বাস্তব ও কল্পনা কল্পিতাদের মহত্তর ও নিকৃষ্টতম পরিচয় ‘থেরিগাথা’ ও অবদানের মধ্য দিয়ে পাওয়া গেছে। তার মধ্যে বহু দেবী, বহু মানবী, বহু দানবী, এমন কি নরকল্পনার নিকৃষ্টতম সৃষ্টিও দেখা দিয়েছে।

 সংস্কৃত কাব্য নাট্য সাহিত্যের পূর্বে আমাদের ব্যাসবাল্মীকির স্রষ্টাদের নিকট প্রত্যাবর্তন করতে হবে। ঐতিহাসিক ভিত্তি ছেড়ে দিয়ে আমরা তাদের সাহিত্যিক ভিত্তির উপরেই