পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২৭৫

চরিত্র-চিত্রণে আত্মনিয়োগ করেন। সংস্কৃত নাট্যেও বর্তমান কালের চিত্রনাট্য কলায় যেমন দেখা যায়,—মনে হয় দর্শকেরা একঘেয়েমীই পছন্দ করতেন!

 রত্নাবলী চরিত্রে কবি কতকগুলি জটিলতার সমাবেশ ক'রে তাকে সাধারণ প্রলুব্ধা নায়িকার শ্রেণীতে অবনমিত করেননি। সিংহল রাজকন্যা রত্নাবলীকে রাজনৈতিক কারণে কৌশাম্বী রাজমন্ত্রী কূটনৈতিক যৌগন্ধরায়ণ কৌশাম্বীরাজ উদয়নের জন্য প্রার্থনা করেন, কিন্তু সিংহল পতি তার ভাগিনেয়ী অবন্তীরাজদুহিতা বাসবদত্তার রূপ গুণ তেজস্বীতার কথা স্মরণ করে তাঁর হাতে কন্যা দান করতে সম্মত হননি, কিন্তু পরে যৌগন্ধরায়ণের প্রচারিত বাসব দত্তার মিথ্যা মৃত্যু সংবাদে নিজ মন্ত্রীকে সঙ্গে দিয়ে জল পথে সুন্দরী কন্যারত্নটিকে বিয়ে দে'বার জন্য পাঠিয়ে দিলেন। দৈব বশে জাহাজ ডুবিতে রত্নাবলী আত্মজনবিযুক্তা হয়ে দাসীরূপে পট্টমহিষীর নিকট প্রেরিতা হলেন। প্রেরক তাঁকে সমুদ্রতীরে কুড়িয়ে পাওয়ার কথা লেখাতে তাঁর নাম রাখা হলো সাগরিকা। পরিচয় তাঁর কেউ নে’য়ওনি, তিনি দে'নওনি।

 সাগরিকা দেখলেন যে ঘরে তিনি রাণী হতে পারতেন সেই ঘরেই তিনি দৈব দুর্বিপাকে দাসীরূপে প্রবিষ্ট হয়েছেন। 'দত্তা-কন্যা’ মনে মনে পূর্ব থেকেই উদয়নকে পতিরূপে বরণ করে নিয়েছিলেন, এখন চোখে দেখে তাঁর সেই অ-দেখা প্রেম সত্যকার গভীরতা লাভ করা কিছুই এমন বিচিত্র নয়।

 তথাপি স্বভাব কোমলা দুর্ভাগিনী রাজকন্যা গোপনে দর্শন পিপাসা মিটাবার আশায় উদয়নের ছবি আঁকেন, আর আপনার অদৃষ্টকে ধিক্কার দেন, ছবি আঁকতে আঁকতে ঐ সর্বকলা