পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭৮
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

থেকে লোক-লোচনের গোচরে এনে সকলের জন্যই আদর্শ স্থাপন করা বড় লেখকের কর্তব্য। শুধু ক্ষণিকের ক্ষীণধারা রসসৃষ্টির মূল্য কটুকু? কাদম্বরীর উপনায়িকা মহাশ্বেতা বিশ্ব সাহিত্যের মধ্যের একটি অনবদ্য সৃষ্টি। আদ্যানারীর মতই শুভ্র পবিত্র জ্যোতিস্নাত অনবদ্যাঃ। এ চিত্রের প্রতিলিপি বা অনুলিপি আমরা পেয়েছি বলে মনে পড়ে না। তার পত্রলেখাও বিচিত্র চরিত্রা। এই যুবরাজ-বান্ধবী মাটীর না পাষাণের? এমন নারী ত কখন কেহ দেখেছে বলে মনে হয় না। আগুনের পার্শ্ববর্তিনী এই ঘৃতভাণ্ড-স্বরূপা নারী জন্মান্তরীণ কোন উগ্র তপ প্রভাবে এমন সুসংযত নির্বিকার! এই তরুণী সত্যই বিশ্বের সবিস্ময় শ্রদ্ধাকর্ষণ কার উপযুক্তা? সংস্কৃত কাব্যনাট্টে তৎকালিক নর-নারীদের কবি-কল্পনার ছাঁচে ঢালা বৈচিত্র্যপূর্ণ চরিত্রচিত্র আমরা সাগ্রহে পর্যবেক্ষণ করে এই সিদ্ধান্তে এসেছি যে, মানব মানবী মগধর্মকে গ্রহণ করতে স্বভাবক্রমে বাধ্য হলেও তাদের আকৃতির মত প্রকৃতিও সেই চিরন্তনীই থেকে থাকে।

 বত্রিশ সিংহাসনে, বেতালপঞ্চবিংশতিতে বহু নিকৃষ্ট চরিত্রের নারীর সৃষ্টি দেখা যায়, ভালমন্দ চিরদিনই আছে, একথা খুবই সত্য, তথাপি মন্দর প্রভাব সমাজে না বাড়লে সাহিত্যে কুচরিত্রের আমদানী মনে হয় কম থাকে। উপদেশ ও দৃষ্টান্তের তখনই বেশী দরকার হয় যখনই পূর্ববর্তীদের নৈতিক শাসন অক্ষুণ্ণ থাকছে নাা দেখা যায়।

 বিশালভঞ্জিকা, প্রবোধচন্দ্রোদয় প্রভৃতি আধ্যাত্মিক চরিত্র নিয়ে লেখাা কালিদাসের কুমারসম্ভবের ‘উমা’ ‘মেনা’ ‘রতি' মেঘদূতের বিরহিণী ‘যক্ষ-জায়া’ এঁদের কথা নিয়ে অনেক