পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮৮
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

বলে তমাল বৃক্ষকেই নিবিঢ় আলিঙ্গনে নিবদ্ধ করছেন, কাঁদছেন আর স্বগতই সন্দেহাকুলচিত্তে বলছেন;—

“কৈছে গোঙাওব হরি বিনা দিন রাতিয়া?”

 আবার ভাবে বিভোর হয়ে বলছেন;—

‘‘যাঁহা যাঁহা অরুণ চরণ চলি যাত,
তাঁহা তাঁহা ধরনী হই মজু গাত।
এ সখি বিরহ সরণ নিরানন্দ
ঐ ছনে মিলই যব গোকুল চন্দ।”

 —তাঁর চরণ যেখানে পড়বে আমার অঙ্গ যেন সেখানকার মৃত্তিকা হয়, মৃত্যুর পর সখি গো, আমি আবার গোকুলচন্দ্রকে ফিরে পাব।

 বৈষ্ণব কবি জগতের চিরন্তনী নারীর মধ্য দিয়ে সম-নিষ্ঠ সাধকের ভগবৎ মিলন-মঙ্গলের নীতিমাল্য রচনা করেছেন। নারীপ্রেমের নৈষ্ঠিক একত্মতা তাঁদের অজ্ঞাত থাকলে এ সৃষ্টি সফলতা লাভ করতো না। অন্যত্র অনেক কিছুই সৃষ্টি হয়েছে, কোথাও রাধা সৃষ্টি হয়নি।[১]

 ময়নামতী চরিত্র বাস্তব ঐতিহাসিক চরিত্র বলেই অনেকের বিশ্বাস, তবে সাহিত্যে তাঁর আসল রূপ কিছু বদলেছে কি না


  1. বৈষ্ণব কবি বল্‌তে আমরা সাধারণতঃ যাঁদের বুঝে থাকি তার বাইরে অসংখ্য কবি, নাট্যকার, গীতিকার অজস্র গানে ও কথায় রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা বর্ণনা করেছেন, সে যে কত তার হিসাব করা সম্ভব নয়। বিখ্যাত পদকর্তারা ছাড়া হরুঠাকুর, রামপ্রসাদ, রাম বসু, বৈজু বাওরা, গোপাল নায়ক, সুরদাস, দাশরথি রায়, রাসু, নৃসিংহ, গদাধর মুখোপাধ্যায়, রসিক চক্রবর্ত্তী, শ্রীধর কথক, ঈশ্বর গুপ্ত, কৃষ্ণকমল গোস্বামী, নীলকণ্ঠ, গোবিন্দ অধিকারী, গদাধর, ঠাকুরদাস, এমন কি