বলা শক্ত। তাঁর স্বামী তাঁকে বিশ্বাস করতেন না, সিদ্ধযোগী হাড়িপার সঙ্গে তাঁর অন্তরঙ্গতা তাঁর ছেলে বৌ পর্যন্ত ভাল চোখে—
ফিরিঙ্গি এণ্টনি, রূপচাদ পক্ষী, মধুসূদন কান, রামানন্দ, রাধামোহন, যদু নন্দন, প্রেমদাস, গিরীশচন্দ্র এমন কি বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ও বৈষ্ণব কাব্যসাহিত্যকে তাঁদের অমৃতনিস্যন্দিনী রচনা দ্বারা সমৃদ্ধতর করতে কুণ্ঠিত হন নি। রূপচাঁদের কতকগুলি হাসির গানের মধ্যে সে কালের ইঙ্গ-বঙ্গভাষার জগাখিচুড়িতে সখিসম্বাদ কি হাস্যরসের স্রোত বইয়েছিল এখনকার অনেকেই তা’ জানেন না। তিনি হয়ত বলতে চেয়েছিলেন, রাধিকা ঠাকুরাণী সে যুগে জীবিত থাকলে ঐ রকম ভাষাই না কি ব্যবহার করতেন! একটু নমুদা দি;—
‘‘আমারে ফ্রড করে কালিয়া শ্যাম তুই কোথায় গেলি?
আই এম্ ফর ইউ ভেরি সরি, গোল্ডেন বডি হল কালি।
পুওর ক্রিচর মিল্ক গেল, তাদের বুকে মারলি শেল,
নন্সেন্স তোর নেই আক্কেল, ব্রিচ অফ কন্ট্রাক্ট করলি।’’
সখিরাও কম যান্ না! মথুরার দরবারে গিয়ে দ্বারীকে ঐ একই সুরে ও ভাষায় বলছেন—
‘‘লেট মি গো ওয়ে দ্বারী, আই উইশ্ টু সি বংশধারী,
ব্রজের রাখাল তোদের কিং, ফুলুটেতে কর্তো সিং,
মজায়ে রাইকিশোরী।’’
বঙ্কিমচন্দ্রের ‘‘কাহে লো সই জিয়ত মরত কি বিধান?’’ ‘‘শ্রীমুখপঙ্কজ দেখবো বলে’’, ‘‘মথুরাবাসিনী মধুরহাসিনী’’ প্রভৃতি পদ সর্ব্বজনপরিচিত। রবীন্দ্রনাথের ‘‘বাঁশরি বাজাতে চাহি’’ থেকে তাঁর ভানু সিংহের পদাবলীর ‘‘সজনি সজনি রাধিকা লো’’, ‘‘শুনলো শুনলো বালিকা, রাখ কুসুম মালিকা, কুঞ্জে কুঞ্জে ফিরনু সখি শ্যামচন্দ্র নাহিরে’’ ইত্যাদি আরও কত না মধুর পদ বঙ্গসাহিত্য-মঞ্জুষায় সজ্জিত রাখা অমূল্য রত্ন!