কবিকঙ্কণের ফুল্লরা বা খুল্লনার বারমাস্যা এ-জাতীয় নয়। শ্রীরাধার ও খুল্লনার বারমাস্যা প্রকৃত বিরহকাব্য। এদের অনুসরণে বাংলায় বহু বারমাস্যা রচিত হয়েছে। ফুল্লরার বারমাস্যা কোটি কোটি দারিদ্র্য অধ্যুষিত দুর্ভাগিনী ভারতনারীর স্বরূপ চিত্র;—
ভাঙ্গা কুঁড়্যা ঘর, তালপাতার ছাওনা,—
“ভেরেণ্ডার থাম ওই আছে মধ্য ঘরে,
প্রথম বৈশাখ মাসে নিত্য ভাঙ্গে ঝড়ে।’’
“বৈশাখের অগ্নিসম খরা তরুতল নাহি মোর করিতে পসরা,
পায়ে পোড়ে খরতর রবির কিরণ,
মাথায় দিতে নাহি আঁটে খুঙার বসন
বৈশাখ হইল বিষ গো বৈশাখ হইল বিষ,
মাংস নাহি খায় সর্বলোক নিরামিষ।
পাষণ্ড জ্যৈষ্ঠমাস, পাষণ্ড জ্যৈষ্ঠমাস,
বেঙচের ফল খাইয়া করি উপবাস।
মাংসের পসরা লইয়া ফিরি ঘরে ঘরে
কিছু ক্ষুদ্র কুঁড়া পাই উদর না পুরে
ভাদ্রপদ মাসে বড় দুরন্ত বাদল
বৃষ্টি হইলে কুঁড়্যায় ভাস্যা যায় জল।”
অভাগিনী ফুল্লরার দুঃখের সীমা নেই। সবাই দেবীর প্রসাদ খায়, বৃথা মাংসের চাহিদা আশ্বিনে থাকে না। হেমন্তের শীতে ফুল্লরা শ্রেণীর হতভাগ্য নরনারীদের বস্ত্রাভাবে যে কত দুঃখ সে