তমরূপে প্রকাশ পেয়েছে। ভারতচন্দ্রের এই চিত্রটিকেই তাঁর রচনার সর্বোৎকৃষ্ট অংশ বলা যায়,—
“অন্নপূর্ণা উত্তরিল গাঙ্গিনীর তীরে,
পার কর বলিয়া ডাকিল পাটনীরে”
ইত্যাদির পর তাঁর আত্মপরিচয়ে—
“গোত্রের প্রধান পিতা মুখ্যবংশজাত,
পরম কুলীন স্বামী বন্দ্যোবংশখ্যাত।
অতি বড় বৃদ্ধ পতি সিদ্ধিতে নিপুণ,
কোন গুণ নাই তাঁর কপালে আগুণ।
কু-কথায় পঞ্চমুখ কণ্ঠভরা বিষ,
কেবল আমার সঙ্গে দ্বন্দ্ব অহর্নিশ।”
ইত্যাদিতে প্রকৃতিও পরমেশ্বরের সাক্ষাৎ পরিচয় একান্ত উপভোগ্য!
কোন কবি তাঁর কালকে অতিক্রম করতে পারেন না। কালের হাওয়া তার রুচিপ্রবৃত্তিকে সংগঠিত করে থাকে; তাই “বিদ্যাসুন্দর” সেদিনে ও তার পরবর্ত্তী অনেকদিন ধরেই বাঙ্গালী সমাজে সমাদৃত ছিল; যাত্রা ও অপেরার প্রধানতম বিষয়বস্তু ছিল। তর্জ্জা এবং কবির লড়াইয়ে সে সময় বহু অশ্লীল রচনা শিক্ষিত সমাজে সমাদৃত থেকেছে। অবশ্য “বিদ্যাসুন্দরের” উপাখ্যান ভারতচন্দ্রের স্বকপোলকল্পিত নয়; তাঁর বহু পূর্ব থেকেই সে কাহিনী বাংলা সাহিত্যে চলে এসেছে; তবে কথা এই আধ্যাত্মিক আবরণ দিলে যে বস্তু সাহিত্যে সমাদৃত হয়, তার নিরাবরণ রূপই কুৎসিত হয়ে ওঠে আত্মিক ব্যাপারে;—