পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
৩০৩

“কেমনে পরের ঘরে ছিলি উমা বল মা তাই?
কত লোকে কত বলে শুনে প্রাণে মরে যাই।
ছাই মেখে অঙ্গে, আমাই বেড়ান ভূতের সঙ্গে,
ওমা তুমিও নাকি তারই সঙ্গে সোনার অঙ্গে মাখ ছাই?”

 বলতে বলতে উত্তেজনা এসে গেল, বড়লোকের গিন্নির মত গরীব জামাইকে তাচ্ছিল্য দেখিয়ে সরোষে বলে উঠলেন;—

“এবার নিতে এলে পরে বলবো উমা ঘরে নাই।”

 মায়েরই ত প্রাণ! মেয়ের মুখে সঠিক সংবাদটী পেতেই সুখ দুঃখের সাথী পতিকে সেই সুসংবাদটা দিতে হর্ষস্মিত মুখে ছুটে গেছেন;—

“মঙ্গলার মুখে কি মঙ্গল শুনতে পাই!
উমা অন্নপূর্ণা হয়েছেন কাশীতে, রাজরাজ্যেশ্বর হয়েছেন জামাই।
শিবে এসে বলে মাগো শিবের সেদিন আর নাই।
যারা পাগল পাগল বলে, বিবাহের কালে সবাই দিলে ধিক্কার,
এখন সেই পাগলের সব, অতুল বৈভব, কুবেরের ভাণ্ডার।”

 মেয়েজামাইয়ের ঐশ্বর্যের পরিচয় তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নিচ্ছেন, আর সবার কাছে তাই ছড়িয়ে দিচ্ছেন! সাত হাত বুক করে সঙ্গে সঙ্গে আশীর্বাদ ও করছেন;—

“হোক্ হোক্ উমা সুখী হোক্ সদাই হ'ত মনে।”

 এমন কত ছবির পর ছবি, মাতৃহৃদয়ের আনন্দ বিষাদের ক্ষণ-পরিবর্ত্তিত চলচ্চিত্র কত কবিই যে প্রাণের রসে রঙ্গিয়ে এঁকেছেন। মহারাজ নন্দকুমারের মেনকা অভিমানভরে বলছেন;—

“এ বার মেয়ে হয়ে বুঝাইব মায়ের মায়া কেমন ধারা।”