কয়? কান্না অবদার হাঙ্গামার চোটে মা বেচারী বিব্রত সন্ত্রস্ত। তাই আমরা রামপ্রসাদের মাতৃতন্ত্রের মধ্যে কত ভাবেই না অভিব্যক্তি দেখেছি। ভাবে গদগদ হ’য়ে ‘‘লক্ষ্মী মা, সোনা মা, আমার কাছে এস মা” গোছের মিনতিও করছেন;—
আবার মনের মতন না হলেই চটে মটে বলছেন;—
“করুণাময়ি! কে’ বলে তোরে দয়াময়ী?
কারো দুগ্ধে দাও বাতাসা, তারা—
আমার শাকে অন্ন মেলে কই?
কারে দিলে ধন জন মা,
হস্তী অশ্বরথচয়।
ওগো তা’রা কি তোর বাপের ঠাকুর,
আর আমি কি তোর কেহ নয়?”
আবার ছেলের হিংসুটেপনা দেখে মা যে অলক্ষ্য থেকে ভ্রুকুটি করছেন, তা’ও তো মায়ের প্রকৃতি-জানা ছেলের কাছে অজ্ঞাত নেই, তা’ আদুরে ছেলের তাতেই বা ভয়টা কিসের?
“আমি নই আটাশে ছেলে, ভয়ে ভুলবো নাকো চোখ রাঙালে,
ওমা, আমি বিষয় চাইতে গেলে, বিড়ম্বনা কতই ছলে,
শিবের দলিল সই-মোহরে যতনে রেখেছি, তুলে।”
আবার আধুনিক ছেলের মত উল্টো ভয় দেখাতেও ওর বাধে না! বলে;—“মায়ে পোয়ে মোকদ্দমা, ধুম হবে রামপ্রসাদ বলে”, তবে মাকে এইটুকু উপায়ও বাৎলে দিয়েছেন, মামলা করলেও;—
“তবে শান্ত হব, ক্ষ্যান্ত করে আমায় যখন তুই মা, কর্বি কোলে।”