বাঙ্গালী মায়েদের আজও ছেলেমেয়েদের কাছে একচোখোমীর খোঁটা খেতে হয়, এটা প্রায়ই দেখা যায়। আর সে বিষয়ে বিশ্ব মায়ের ছেলেদের মত “শ্যামার খাস মুলুকের প্রজা’’ ত নয়, তাই মায়ের তবিলদারী প্রত্যেক ছেলেই দাবী করলে মা বেচারীরা ফাঁপরে পড়ে যান। তা’ ভক্ত ছেলে মাকে অভয় দিয়ে নিজের সার্টিফিকেট নিজেই দাখিল করতে ভোলেননি;—
“আমায় দে’মা তবিলদারী।
আমি নিমক হারাম নই শঙ্করী!”
তা’তেও যখন দরখাস্ত মঞ্জুর হ’ল না, তখন আর মায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ রইল না, নির্ব্বেদ এসে গেল;—
“তুমি এ ভাল করেছ মা, আমার বিষয় দিলে না,
এমন ঐহিক সম্পদ কিছু আমারে দিলে না,
কিছু দিলে না, পেলে না, দিবে না, পাবে না,
তায় বা ক্ষতি কি মোর মা!”
তা ছেলের ধন হলে মার পক্ষেই ভাল, মা যদি ন্যায় হন্তারক হন, ছেলে আর ওর বেশী কি বলবে? দীর্ঘশ্বাস ফেলে মাকে শুনিয়ে বসে;—
“মা হওয়া কি মুখের কথা?
শুধু প্রসব করলেই হয় না মাতা।
যদি না বুঝেন সন্তানের ব্যথা,
দশমাস দশদিন যাতনা সয়েছেন মাতা,
এখন ক্ষুধার বেলা শুধালে না, এল পুত্র গেল কোথা?”
মা যেমন ছেলেকে টানেন, ছেলে যতদিন শিশু থাকে, বালক থাকে, মায়ের প্রতি টান তারও বড় কম থাকে না।