পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২২
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

সে দিনে বেশী লোকে জানতো না, বিশেষ ক’রে বড় ঘরের শিক্ষিত জনসমাজে।

 গিরীশচন্দ্র মায়ের রাঙ্গা পা-দু’খানির প্রকৃত রহস্য জানতে পেরে গাইলেন;—

“আয়, জবা আনি নইলে কি দিব পায়?
সোনা সাজে না রে মায়ের রাঙ্গা পায়।”

ঐ রাঙ্গা পায়ের উপাসক কি কম? কেউ বলছেন;—

“তুলে নে’ রাঙ্গা জবা মায়ের পায়ে সাজবে ভাল।”

কেউ বলছেন;—

“তখন আমি মনে মনে, তুলবো জবা বনে বনে,
মাখায়ে ভক্তি-চন্দনে, পদে দিব পুষ্পাঞ্জলি।”

 আবার শুধু কি অঞ্জলি পেয়েই রাঙ্গা পা-দু’খানির পার আছে? পণ্ডিত শ্যামাচরণ ঐ চরণকে ভবসাগর পার হবার জন্য তরণীর কাজেই লাগিয়ে নিলেন, বললেন;—“দে’ মা কালি, পদতরি, ভিক্ষা করি।” তা শুধু তিনি কেন, এ কথা বিস্তর লোকেই ত বলেছেন;—

“মা তোমার চরণ দু’খানি ব্যাধির ঔষধ জানি
তব নাম নিস্তারিণী, করো না মা বঞ্চনা।”

 অতুলকৃষ্ণ মিত্র ঐ রাঙ্গা পায়ের মোহগ্রস্ত হয়ে বারে বারেই পাদপদ্মে মাথা কুটছেন;—

“কোন কামনা করিনে কিছু যাচিনে শ্যামা!
ও রাঙ্গা চরণে শুধু হেরি সুষমা।”

বলছেন;—

“আমার জীবন মরণ, শান্তি শরণ, তোর মা দু’টি রাঙ্গা পায়।”