পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৩২৫

শোক দুঃখ যাতনা”; তাঁর এবং নজরুল ইসলামের ‘‘কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা আলোর নাচন” এবং আরও কত কি। এর শেষ নেই, শেষ হবেও না। অন্ততঃপক্ষে;—

“জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী”

এ বাক্যের অথবা;—

“শরণাগত-দীনার্ত্ত-পরিত্রাণ-পরায়ণে
সর্ব্বস্যার্ত্তিহরে দেবি নারায়ণি নমোহস্তু তে।”

—এই আকুল প্রার্থনার।

 এই “সর্ব্বস্বরূপে সর্ব্বেশে সর্ব্বশক্তিসমন্বিতা”কেই সমস্ত সুখে দুঃখে শরণ না নিয়ে মানুষ বাঁচতে পারবে না, বিশেষ রোগ শোকে। দুর্গা কালী চণ্ডী বাণী লক্ষ্মী অথবা দেশ-জননী জীবধাত্রী ধরিত্রীই সর্বজীবের কোন না কোন প্রকারে সান্তনার উপায়। জীব যে মাতৃ-মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই জন্ম নিয়েছে!

 এ সব ছাড়া আরও এক প্রকারের নারী-চিত্র আমরা কদাচ নর-রচনার মধ্য দিয়ে পাই; সাহিত্যে একঘেয়েমির মধ্যে যা’ একটু রসের জোগান এনে দেয়। এগুলি ব্যঙ্গচিত্র;—

“বাড়ীর গিন্নি আজ চল্লে কোথায় উদাসিনী হয়ে?
তোমার এত সাধের পাকা হাঁড়ি যাওনা দুটো নিয়ে।”

প্যারীমোহন কবিরত্ন বলছেন;—

“যার পয়সা নেই তার মরণ ভাল সংসারে।
পয়সা ভিন্ন হয় না ধন্য মান্যগণ্য কে করে?
দরিদ্র হইলে পতি, প্রাণ-প্রেয়সী রসবতী,
রোষান্বিতা হয়ে অতি, পতির পাশে ঘেঁষে না,
সদাই বলে বাঁচি মলে।”