পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২৮
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

পরিচিতা হয়েছেন, যেমন সাবিত্রী, যেমন হর-পরিণীতা পার্বতীউমার ভিখারী সংসারের অর্থাভাবে কন্যারূপ পরিচয়ে ভক্ত শাঁখারীর কাছে শাঁখা পরা। কিম্বদন্তীমূলক হলেও ভক্তিরসাত্মক এই গল্পগুলির একটা বিশেষ মূল্য আছে।

 আধুনিক প্রায় সমস্ত ইংরাজী ঔপন্যাসিকদের রচনার মধ্যে সৃষ্টিশক্তির গভীর শিথিলতা দেখা দিয়েছে। যান্ত্রিক আবিষ্কারের যুগে মানুষের মনও একান্তভাবেই যেন যন্ত্রবদ্ধ হয়ে পড়েছে। আধুনিক নারীরা যত্র তত্র হোটেলে রেস্তোরাঁয় পুরুষবান্ধবদের সঙ্গে গিয়ে “ককটেল,” “ক্ল্যারেট” “শ্যম্পেন,” “পোর্ট’’, অ্যাপেরিটিফ, আরও কত কিই না ফরমায়েস করছেন; একখানা কাটলেট চাখ্‌ছেন, নয়ত দু’একখানা স্যাণ্ডউইচ; রুমালে মুখ মুছে আয়না ধরে ‘‘ঠোঁটের সিন্দুর” ও পাউডরপাফ্‌, বা’র করে “মেক-আপ” মেরামত করে নিচ্ছেন, পুরুষ বান্ধবদের কাছ থেকে সিগারেট চেয়ে নিচ্ছেন;—দেশ, রাষ্ট্র, সমাজ, ধর্ম এ-সব বড় ব্যাপারের খবর কোথাও মেলে না! গতযুদ্ধের পরের সাহিত্যেও নূতন কিছু বড় রকম সাহিত্যিক-চরিত্র নারী-চরিত্র সৃষ্টি হতে দেখিনি। হীনতা যে অনেক বেড়েছে সে-টা নব্যসাহিত্যে অস্পষ্ট নেই; অথচ এত বড় দুইটা সাহিত্যিক উপাদান সামনে দিয়ে চলে গেল!

 সেক্সপীয়রের আদর্শ প্রণয়িনী জুলিয়েটের প্রণয়ীর শোকে মৃত্যু, ইয়াগোর চক্রান্তে ডেসডিমোনার স্বামী ওথেলোর হাতে নিধন, অফেলিয়া প্রভৃতি চরিত্র আমাদের সমবেদনা উদ্রেক করে; পোর্শিয়া আমাদের বিস্ময় এবং শ্রদ্ধা উদ্রেক করেন। “টেমিং অফ দি শ্রু” (উগ্রচণ্ডার বশীকরণ) নাটকে ক্যাথারিণা,