পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
১৭

কাছে গিয়ে পড়েন। বুদ্ধ মায়াবলে তাঁর চেয়ে অপরূপ সুন্দরী এক অপ্সরা সৃষ্টি ক'রে তাঁর রূপগর্ব চূর্ণ করেন। তারপর তাঁর চোখের সামনে সেই সুন্দরীর দেহের ক্রমপরিণতি—জরা এবং মৃত্যুর বীভৎস করুণ দৃশ্য দেখিয়ে ক্ষেমার মনে বৈরাগ্যের সঞ্চার করেন। ভগবান বুদ্ধের উপদেশে স্বামীর অনুমতি নিয়ে রাজমহিষী ভিক্ষুণীসম্প্রদায়ে প্রবেশ করে অচিরে অর্হৎ পদ প্রাপ্ত হন। অলোকসামান্য রূপের জন্য থেরী উৎপলবর্ণার খ্যাতি যৌবনে এত ছড়িয়ে পড়েছিল যে, বিবাহার্থীদের একজনের সঙ্গে বিবাহ দিলে বহুজনের সঙ্গে শত্রুতা হ'বার সম্ভাবনা দেখে তাঁর পিতা তাঁকে চিরকুমারী রেখেছিলেন এবং বৌদ্ধভিক্ষুণী-সঙ্ঘে যোগ দিতে দিয়েছিলেন। তিনি পাণ্ডিত্যের এবং ধর্মপরায়ণতার জন্য ভগবান বুদ্ধের বাঁ পাশে আসন পেয়েছিলেন এবং মেয়েদের সম্বন্ধে যে কোনো জটিল প্রশ্ন উঠলে বুদ্ধ স্বয়ং তার পরামর্শ গ্রহণ ক'রতেন। এই যুগের নারীদের মধ্যে সব চেয়ে প্রতিভাশালিনী বাগ্মী ছিলেন থেরী পটাচারা। তাঁর অমৃতমধুর উপদেশবাণী শুনে একদিনের একটি সভায় পাঁচশ’ পর্যন্ত নারী বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। বহুসহস্র নারী তাঁর আদেশ দৈবাদেশের মতো মা'নত, বুদ্ধের জীবিতকালে উত্তর-ভারতের বহু রাজ্যে তাঁর অসামান্য প্রভাব ছিল। তাঁর প্রথম জীবনের করুণ কাহিনী তাঁর লেখায় পাওয়া যায়। তিনি ছিলেন শ্রাবস্তীর এক সম্ভ্রান্ত শ্রেষ্ঠীর কন্যা, যৌবনে এক যুবকের প্রেমে প'ড়ে পিতার অসম্মতিতে বিবাহ অসম্ভব দে'খে গৃহত্যাগ করেন। বিদেশে বিবাহ ক'রে কিছুদিন সুখে স্বচ্ছন্দেই কাটিয়েছিলেন, তার পর বিপদের বন্যা এল। স্বামী সর্পদংশনে

O.P. 92-3