“ঠাকুরমার অমলা সকল চরিত্রই সে-দিনে সমাদর লাভ করেছিল।
তারকনাথ বিশ্বাসের বিপুল, গ্রন্থাবলীর “সুহাসিনী,” “মনোরমা” প্রভৃতির কথা হয়ত অনেকেই ভুলে গেছেন।
বঙ্কিমচন্দ্রের “কৃষ্ণকান্তের উইল”-এর প্রধান দুটি চরিত্র ভ্রমর এবং রোহিণী। ভ্রমরের মধ্যে খানিকটা সূর্যমুখীরই পুনরাবৃত্তি পাই; প্রভেদ এই যে, পরনারী-আসক্ত প্রিয়তমের উপর তীব্র অভিমান এবং ক্ষমাহীন অত্যুগ্র আদর্শবাদের জন্য ভ্রমর নিজেও সুখী হ’ল না, অপদার্থ গোবিন্দলালকে এতটুকু কোথাও অনুতাপের সান্ত্বনা দিয়ে গেল না। রোহিণী-চরিত্র প্রথম থেকেই পাঠকের যুগপৎ সমবেদনা এবং বিরাগ হাকর্ষণ করে, শেষদিকে গোবিন্দলালের হাতে মৃত্যুর পূর্বে জীবনরক্ষার তার অনুনয়-বাণী এবং নিশাকরের সহিত গোপনে সাক্ষাৎকার তার পূর্বচরিত্রের সহিত খাপ খায় না, এ-কথা কেহ কেহ বলেন বটে, কিন্তু দুষ্প্রবেশ্য মানবচিত্তগুহার অতলস্পর্শ আধারে কি যে সঞ্চিত আছে মানুষ নিজেই কি তা সকল সময়ে অনুমান করতে পারে? যে-দিনে রোহিণী ভ্রমরের অনুজ্ঞায় করুণী পুষ্করিণীতে আত্মবিসর্জন করে তার ব্যর্থজীবন শেষ করতে চেয়েছিল, দুরাকাঙ্ক্ষার সাফল্যে বধিতাশয় চিত্ত তার সেই হতাশা ক্লান্ত পূর্ব জীবনের সব কিছুর সঙ্গেই পূর্বেকার মৃত্যুভয়হীনতাকেও কেন না পরিহার করতে পারে? ইহাই ত’ তার পক্ষে স্বাভাবিক। সে একজন তুচ্ছ নারী। একনিষ্ঠা সে কোনদিনই ছিল না। হরলালের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে গোবিন্দলালকে আশ্রয় করার অর্থ এ নয় যে,