পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
৩৬৫

সাহিত্যে নারী চরিত্রঃ জী ও সৃষ্টি ত্যাগ-মহীয়সী নারীর এই মহাপূজায় পূর্ণাধিকার স্বীকৃত, কিন্তু পতিত বা পতিতা কাহারও পূজামণ্ডপে স্থান নেই। এ-পূজা পূর্ণ তান্ত্রিক পূজা, পঞ্চ মকারকে বলি দিয়ে তবে এর অধিকারী হওয়া যায়। শান্তি বঙ্কিমচন্দ্রের অপূর্ব সৃষ্টি, আজ বাংলাদেশে তেজস্বিনী মেয়েদের ছবিগুলিতে চোখ বুলালেই শান্তির প্রতিচ্ছায়া সর্বত্র দেখতে পাওয়া যাবে; যেমন ভ্রমর, কমলমণি, সূর্যমুখী, শৈবলিনীকেও দেখা যায়। শক্তিমান্ সৃষ্টিকর্তার শক্তির পরিচয় তো এইখানেই।

 এ-যুগের আর একজন প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক উপন্যাস-লেখক রমেশচন্দ্র দত্ত। তাঁর “বঙ্গবিজেতা” “মাধবীকঙ্কণ”, “জীবনসন্ধ্যা”, “জীবনপ্রভাত”-এই শতাধিক বর্ষের ইতিহাসে আমরা বহু নারীচরিত্রের স্ফুরণ দেখি। অমলা, কমলা, সরল, বিমলা, মহাশ্বেতা, হেমলতা, লক্ষ্মী, পুষ্পকুমারী এষং তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ চরিত্র ভীবালা। “সংসারের জ্যেঠাইমা, বিন্দু, সুধা, কালীতার, উমাতার ঘরোয়া মানুষ, নেহাৎ বাংলাদেশেরই। কিন্তু তাদের থেকে ঢের বেশী করেই তার মারাঠী, রাজপুতানীরা মনোহরণ করে নেয়।

 বঙ্কিমযুগের অন্যান্য বড় লেখকদের মধ্যে দীনবন্ধু মিত্র, সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়; দামোদর মুখোপাধ্যায়, গিরীশচন্দ্র ঘোষ প্রভৃতির নাম করতে হয়। সঞ্জীবচন্দ্রের “জাল প্রতাপচাঁদ” সে সময়কার সামান্য পূর্বের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে রচিত; “কণ্ঠমালা” ও “মাধবীলতা” উপন্যাসের শৈল ও মাধবী চরিত্র মধ্যে শৈল আধুনিক সাহিত্যের নারীচরিত্রের পূর্বরূপ, মাধবী প্রাচীনযুগের আদর্শ মেয়ে।