পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৩৭১

কোন রকম হীনতা তাঁর সহ্য হয়নি। অতি গাম্ভীর্যপূর্ণ “পতিতোদ্ধারিণি গঙ্গে” বলে বাংলাদেশের জন্মদাত্রী এবং পালনধাত্রী জননী জাহ্নবীর স্তোত্রগীতি এবং

‘‘যেদিন সুনীল জলধি হইতে উঠিলে জননী ভারতবর্ষ!
উঠিল বিশ্বে সে কি কলরব, সে কি মা ভক্তি, সে কি মা হর্ষ।”

এবং এদেরই সঙ্গে সমতালে দেশপ্রেমের ও মাতৃপূজার কত না অবদান তাঁর কাছ থেকে দেশবাসী লাভ করল;—যাদের কারু কারু মূল্য শুধু এদেশেই নয়, বিশ্বের দরবারেও স্থায়ী হয়ে রয়ে গেল।

“বঙ্গ আমার, জননী আমার, ধাত্রী আমার, আমার দেশ
কেন গো মা তোর মলিন বয়ান,
কেন গো মা তোর মলিন বেশ?”

তারপর সব চেয়ে বড় কথা সেই যে বুক ফুলিয়ে বলা;—

“আমরা ঘুচাব মা তোর কালিমা, মানুষ আমরা নহি ত মেষ,
দেবী আমার, সাধনা আমার, স্বর্গ আমার, আমার দেশ?”

এবং

“ধনধান্যপুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা,
তাহার মাঝে আছে দেশ এক, সকল দেশের সেরা,
সে যে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ, স্মৃতি দিয়ে ঘেরা।”

 এসব গান কি শুধু মুখের কথা? নিশ্চয়ই নয়। আমরা দেখেছি এই বজ্র বিদ্যুতে ভরা মেঘমন্দ্র বাণীকে মূর্ত্ত হ’তে। এর যে একদিন প্রাণবন্ত হয়ে উঠে মরা বাঙ্গালীর কাণে সঞ্জীবনী মন্ত্র প্রদান করে তাদের প্রাণের তারে জীবনীশক্তির অনুপ্রেরণা দিয়েছিল! আজ দুর্ভাগ্য বাংলা কি তার এই চরম দুর্দ্দশার সামনে দাঁড়িয়ে সেই স্মৃতির সুরকে জীবনের তারে আবার তেমনই