পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৩৮৩

চারণের মতই তিনি বর্তমানের সঙ্গে তুলনীয় এক অতীত অত্যাচারের মর্মন্তুদ কাহিনীর পটভূমিকা নিয়ে এসে আমাদের মাতৃ-হৃদয়ের সামনে ধরে দিয়েছিলেন। সেই তীক্ষ্ণাগ্র সূচিমুখ বাণ আমাদের হৃদয়কে শোণিতাক্ত করেছিল, কিন্তু সে সুচিকাভরণ কি অসাড় মনোবৃত্তিকে স্থায়ী রাখতে পেরেছে? কে’ ক’দিনের জন্যই বা বলতে পারলে;—

“কার তরে এই শয্যা দাসী, রচিস্‌ আনন্দে?
হাতীর দাঁতের পালঙ্কে মোর দে’রে আগুন দে।
পুত্র যাহার বন্দীশালায় শিলায় শুয়ে, হায়,
ঘুম যাবে সে দুধের ফেনা ফুলের-বিছানায়?
কুমার যাহার উচিত ক’য়ে সয় অকথ্য ক্লেশ,
সে কি রাজার মন ভোলাতে পরবে ফুলের বেশ?
দুলাল যাহার শিকল বেড়ীর নিগ্রহে জর্জর,
জন্তুলিকা? রত্নমুকুট তার শিরে দুর্ভর।
  —নাই কিছুরই সাধ,
যে-দিকে চাই কেবল দেখি লাঞ্ছিত প্রহ্লাদ।”

আমরাও কি সেই আহতচিত্ত কবির দৃষ্টির অনুসরণ করে আজ লক্ষ লক্ষ প্রহ্লাদের সেই—

“যে-দিকে চাই মলিন অধর উপবাসীর চোখ,
যে-দিকে চাই গগন-ছোঁয়া নীরব অভিযোগ
যে-দিকে চাই ব্রতীর মূর্তি নিগ্রহে অটল।”

দেখতে পাচ্ছি না? আমাদের অন্তরাত্মা কি আজ সত্যই ডুকরে কেঁদে উঠে বলছে না;—