পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৩৮৭

—এবং “স্নেহলতা”র বিবাহ-পণ দিবার জন্য পিতাকে ভিটা বাঁধা দিতে হবে শুনে পুড়ে মরার পর সমাজকে যে তীব্র কষাঘাত করেছিলেন তার জন্য বঙ্গনারীমাত্রেই তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।

 কিন্তু কথা এই যে, চাবুক হাতের কাছে থাকলেই যে তা’ নির্বিচারে চালাতেই হবে সেটা সভ্যতাও নয়, সুবিচারও নয়। হিন্দুসমাজের ভালমন্দ স্থূলসূক্ষ্ম সমস্ত রীতিনীতিকে এবং মহামহোপাধ্যায় সংস্কৃত শিক্ষিত মাত্রকেই চাবুকপেটা করায় আত্মপ্রসাদ হয়ত আত্ম-রুচি অনুসারে লাভ করা যেতে পারে; কিন্তু যে ন্যায়ের মর্যাদার গৌরব তিনি নিজের মনের মধ্য থেকেই করেছেন, তা’তে নিশ্চয়ই আঘাত দেওয়া হয়। কারু লেখার ভালমন্দ সমালোচনা করতে গেলেই যে তাঁকে কুৎসিত ভাষায় গাল দিতে হবে, এমন বিধান কোন দেশেরই শিষ্টাচারে নেই। তাঁর সুললিত ছন্দের, দেশপ্রেমের, নারীমাহাত্ম্য উপলব্ধির এবং নারীর প্রতি গভীর সহানুভূতির আমরা প্রশংসা করি। তথাকথিত সেই সব নারীহিতৈষী যাঁরা উচ্ছৃঙ্খল নারীচিত্র এঁকে তাদের সর্বনাশের পিচ্ছিল পথকে পিচ্ছিলতর করতে চান, তাঁদের চেয়ে আমরা এই রকম নারী-মহিমা উদ্বোধনকারীকেই প্রকৃত নারীবন্ধু বলি। নারীর নারীত্ব বজায় রেখে যে উন্নতি তারই নাম প্রগতি।

 মোহিতলাল মজুমদারের কবিতায় অনেক বিচিত্র ধরণের নারীচিত্র দেখা যায়। তাঁহার “উর্ব্বশী পুরূরবা” এবং “নুরজাহান” উল্লেখযোগ্য; “দেবদাসী” কবিতার একাংশ উদ্ধৃত করা হলো;—

“আমি দেবদাসী, দেবী নই আমি—
দাবী নাই সুধাপানে,