গা-ঢাকা হয়েছে, বুঝি কেউ বা গয়ায় পিণ্ডদানই করে থাকবেন। তাঁর অপূর্বসৃষ্ট “বিরাজ বৌ” পড়ে মনে হয়েছিল, অমৃতকুম্ভে এক ছিটে গোময় প্রদত্ত হয়েছে। বিরাজের গৃহত্যাগ তার চরিত্রের সঙ্গে কিছুতেই খাপ খায় না। আত্মহত্যা বরং সম্ভবপর ছিল, ও-প্রকৃতির মেয়ে এ-রকম চিন্তা অতক্ষণ ধরে মনে পুষতে পারে না।
“পণ্ডিতমশাই” উপন্যাসের ‘কুসুম’, ‘শৈলজা’, ‘নারায়ণী’, ‘মেজদিদি’, ‘বিন্দু’ এদের সমজাতীয়া। তেজস্বিতা ও স্নেহের রৌদ্র-ছায়ায় চরিত্রগুলি উজ্জ্বল ও সুমধুর। এঁদের সুসময় অথবা দুঃসময়ে দেবর, ভাসুরপো, জায়ের-সতাতো ভাই যে কোন বাড়ীর অথবা পরের ছেলে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরতে বাধে না; আবার রাগের মুখে এঁদের মাকে বা বড় জাকে কুকথা বলা, স্বামীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা, ঝনাৎ ক’রে চাবির গোছা ফেলে দিয়ে পৃথক হওয়া, এ সব ব্যাপার একই ধরণের হলেও লেখকের রচনাশক্তির যাদু দণ্ড স্পর্শে অত্যন্ত স্বাভাবিক হয়েছে। ঘরে ঘরে এদের দেখা আমরা নিয়তই পেয়ে থাকি বলে বারে বারে দেখেও অসঙ্গত মনে হয় না।
“মেজদিদি”র মেজদি বিন্দু ও নারায়ণীর সমশ্রেণীর, একই মডেল, তবে “বিন্দুর ছেলে’’র বিন্দু-চরিত্রে ভাবাধিক্য কিছু অতিরিক্ত থাকলেও চরিত্রটী অনবদ্য। “রামের সুমতি’’র নারায়ণী শরৎচন্দ্রের একটি অপূর্ব সৃষ্টি, কাল্পনিকতাশূন্য অতি সহজ পরিচিত অথচ বিশিষ্ট একটী রূপ আছে।
‘‘আঁধারে আলো”র আঁধার বড় সহসাই যেন কেটে গিয়েছিল; অস্বাভাবিক তবুও বলা যায় না। ‘‘বাস্নায় আগুন