পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৩৯৯

দেওয়া’’র কথা শুনেই লালাবাবু একদিন বৈরাগ্য অবলম্বন করেছিলেন।

 “পল্লীসমাজ”-এর জেঠাইমা বিশ্বেশ্বরীর চরিত্র “গোরা”র আনন্দময়ীর ছাঁচে গড়া হলেও সুন্দর। রমা, রমার মাসী, পল্লীসমাজের কলহপ্রিয়া নারীরা বাস্তবচিত্র।

 “শ্রীকান্ত”র অন্নদাদিদির চরিত্র বিশ্বসাহিত্যে স্থান পাওয়ারই যোগ্য, শরৎ সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ চরিত্র!

 “বৈকুণ্ঠের উইল”-এর বিমাতা ভবানীর চরিত্র নারীচরিত্রের অত্যুচ্চ পরিণতি।

 ‘‘অরক্ষণীয়া’’র জ্ঞানদা অনেকটা “মহানিশা’র অপর্ণার স্বগোত্রা। নিজেকে কোনমতে পরের গলগ্রহ হয়ে থাকা থেকে মুক্ত করতে আত্ম-পীড়নের চরমে যেতেও প্রস্তুত। দুজনেরই অন্তরে প্রেমপাত্রের দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে তীব্র অভিমানই তাদের আত্মত্যাগী করেছে।

 “নিষ্কৃতি”র সমস্ত চরিত্রই চমৎকার ফুটেছে। “গৃহদাহ”এর মৃণাল মেয়েটি আমাদের পূর্বপরিচিতাদেরই যমজা, তথাপি মরুভূমে ওয়েসিস। অচলা সাহিত্যে যাই হোক, সংসারে অচলা! “দত্তা’’র বিজয়া চরিত্রটি মনোরম।

 “দেনা পাওনা”, “বামুনের মেয়ে”, “নববিধান” এদের মধ্যে বিশেষত্ব এমন কিছু দেখা যায় না। “বামুনের মেয়ে”তে কৌলীন্য প্রথার পাপের চরম দুর্দ্দশায় মন শিউরে উঠে, বলে ওঠে “ভগবান রক্ষা করো!” এদেশে যতকিছু সামাজিক ক্ষতিকর বিধান হয়েছিল, তার মধ্যে এই বৈবাহিক কৌলীন্যপ্রথাকে প্রশ্রয় দান সব চেয়ে বেশী ক্ষতিকর হয়েছে।