পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০০
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

 ‘চন্দ্রনাথ”-এর সরযু তার শান্ত মাধুর্যে আমাদের মনের উপর যথেষ্ট দাবী করে। পিতামাতার অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত এমন ক’রে কত নিরীহ সন্তানকেই করতে হয়! প্রভাতকুমারের ঘোট গল্প “কাশীবাসিনী”তে কুলত্যাগিনী অপরিচিতা জননী, হঠাৎ মেয়ে-জামাইয়ের বাসায় এসে স্নেহ-বুভুক্ষা মিটাতে গিয়ে ‘চোর দায়ে পড়া’—বাস্তবিক চোখে জল আনে। পাপ এইজন্যই নরের চেয়ে নারীর পক্ষে সাঙ্ঘাতিক। মা অবনতির চরমে পৌঁছেও মায়ের প্রাণ হারায় না; আর সেইখানেই হয় তার ভীষণ প্রায়শ্চিত্ত!

 তাঁর নায়িকারা রন্ধনবিদ্যায় অতি পটীয়সী, অথচ নিজেরা সেকালের দিদিমায়েদের মত কৃচ্ছ ব্রতপরায়ণা নিরামিষাশী বা উপবাসী। এ রকম মেয়েদের দাম যুগে যুগে খুবই চড়া, সে যে কোন শ্রেণীর মধ্যেরই হোক, তাতে সন্দেহ কি! বিশেষতঃ এই বাজারে ত কথাই নেই। তবে কথা এই, হোটেল রেস্তোরাঁয় আধুনিক মেয়েদের নির্বিকার ভোজন-বিলাস দর্শনকারী পুরুষ পাঠকবর্গ এ বিষয়ে বিশ্বাস রাখতে পারলে হয়।

 তবে শরৎচন্দ্র এ বিষয়ে পূর্ববর্তীদেরই অনুসরণ করেছেন মাত্র, কোন মৌলিক গবেষণারই পরিচয় দিতে পারেন নি। ভোজন-বিলাসী বাঙ্গালী সর্বযুগেই রান্নাঘরের খবরদারীটা বজায় রেখেছেন, তা সে ‘চলে যেতে ঢলে পড়া’, “নবনীত-দেহা” শ্রীরাধিকাই হোন, নবীন কিশোরী খুল্লনা, নববধু জয়াবতী, ব্যাধপত্নী ফুল্লরা এ বিষয়ে কারুকেই সেখানে ঢুক্‌তে দিতে আপত্তি নেই। আপত্তি ছেড়ে বরঞ্চ সাগ্রহ সম্মতিই আছে। আর তাঁরাও পিয়ানোর দু’খানা গৎ শুনিয়ে না দিয়ে বা চায়ের