পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০২
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

বস্তু তাতে নেই। “পথের দাবী”র আসল দাবী যেখানে সেই সব্যসাচী-চরিত্রই আমাদের আলোচনার বাইরে।

 “শেষ প্রশ্ন”র কমল, রূপসী দাসীর রূপসী অবৈধ কন্যা, ক্ষণিক মোহ এবং দেহের ধর্মকেই সব চেয়ে বড় আদর্শ বলে সে রক্তের গুণে মেনে নিয়েছিল; তাই আর্টিষ্ট শিবনাথ যখন তাকে ছেড়ে মনোরমাকে প্রেম-নিবেদন আরম্ভ করেছিল, তখন বিনা অভিযোগে মনোরমার বাগ্‌দত্ত স্বামী অজিতকে দয়া করে তার অসহায়তা দূর করতে গে’ল। মনোরমার গৃহত্যাগ আদর্শ চরিত্র আশুবাবুকে আঘাত দিল। কিন্তু ‘শেষপ্রশ্ন’ যা’ নিয়ে সেই অসংযমে এবং আদর্শবাদে তার সমাধান কিছুই হ’ল না,—অবশ্য অত সহজে হ’বার কথাও নয়। কমলের বাগ্মিতায় বিদ্বৎসমাজ স্তম্ভিত হয়ে রইল এবং তার ধৃষ্টতা দেখে আমরাও রইলাম! তার শেষনীতি তার মত মেয়েরই উপযুক্ত এ কথা আমরা সর্বান্তঃকরণে স্বীকার করি।

 শরৎচন্দ্রের নারীচরিত্রে অনেক শ্রেণীর নারীকে আমরা একত্র দেখেছি, অনেক হীনতা এবং নীচতার মধ্যেও খুবই বড় বড় আদর্শের ছাপও সোনার মত উজ্জ্বল হয়ে আছে। তারা পুরুষকে নিয়ে বাঁদর নাচায় বটে, তবে পুরুষ সংযম হারালে তাকে মাঝে মাঝে চাবুক দিতেও যথেষ্ট চেষ্টা করে এবং নিজেরাও কৃতকার্যের জন্য কোথাও অনুশোচনা কোথাও অন্য রকমে প্রায়শ্চিত্ত গ্রহণ ক’রে থাকে, কিন্তু তাঁর পথানুসরণকারীদের মধ্যে অচিন্ত্য সেনগুপ্ত, বুদ্ধদেব বসু, প্রবোধ সান্ন্যাল, এমন কি সুবিদ্বান ডাঃ নরেশচন্দ্র সেনগুপ্তর লেখাতেও সেকালের ভারতচন্দ্র প্রভৃতির মত আব্রু পরদার একান্ত অভাব ছিল, যেটা