পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০৬
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

পেয়ে অধর এবং ওষ্ঠের প্রতি দৃষ্টি সন্নিবিষ্ট করি এবং স্বতঃই পরশুরামের কথা স্মরণে ভাসে, “মা, তোমার ঠোঁটের সিঁদুর অক্ষয় হোক!”

 “বনফুলের” ‘জঙ্গমের’ “ভীমজাল” ছাড়িয়ে বহু উজ্জ্বল নারীচিত্র আমাদের চোখে ভাসে। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিবৈচিত্র্যের মতই সে সব সৃষ্টিও একান্ত স্বভাবগত এবং জীবন্ত। বেলা, বিনি, হাসি, উমা, সুরমা, হীনচরিত্রের উপর রঙ্গীণ ঢাকনা ঢাকা “মিষ্টি” ও “সোনা” সোহাগ গলান নামের “দিদি”রা, আর সব চেয়ে চিত্তাকর্ষণ করে অথচ একেবারেই ঘরোয়া মানুষটী সাহিত্য-সংসারে নবপ্রতিষ্ঠিত মূর্তি ভণ্টুর বৌদিদি এবং তারও চেয়ে সেই অভাগিনী রহস্যময়ী পানওয়ালী। তাঁর অন্যান্য গ্রন্থবর্ণিত সকল চরিত্রেই একটা বৈশিষ্ট্যের ছাপ আছে, পৌনঃপৌনিক এক ঘেয়েমী,—যার জন্য অনেক মস্ত বড় লেখকের লেখাও বেশীক্ষণ সহ্য করা যায় না, সে জিনিসটা নেই। তাই “স্থাবর” বা “জঙ্গম” হলেও নেহাৎ অসহ্য হয় না। নারী চরিত্র সমালোচনার প্রবন্ধে অসঙ্গত না হলে একটী কথা এখানে বলি “জঙ্গম” শেষদিকে আর দেড়শো পাতার কমে কলেবর নিলেই ভাল করতো।

 সজনীকান্ত দাসের হাতের চাবুকটাতেই তাঁর সাহিত্যসাধনার সাফল্য। তাঁর স্ব-নামে রচিত গল্প বেশী পড়িনি, পড়েছি কবিতা এবং সমালোচনা এবং তাঁর সাহিত্যজগতের দাম তাতেই। “বনফুলে’’র সঙ্গে এখানে আমরা সকলেই হয়ত একমত,—“কুখ্যাতি করে যে যশ লভেছ, সুখ্যাতি করে হারাবে হে।” ‘মাতৃজাতি’কে তিনি অবশ্য যথেষ্ট খাতির করেই চলেন, নেহাৎ