পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০৮
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

খেয়ালখুসী দোষগুণসমেত। তা’বলে পরবর্তিনী উজ্জয়িনীকে এ প্রশংসা দেওয়া যায় না। পাশের বাড়ীর সর্বসুখী সুশান্ত বউটি যে স্বামী শ্বাশুড়ী নিয়ে প্রশান্ত জীবনকে উপভোগ করছিল, তার কথা মন থেকে মুছে যায়নি। আর বিদেশিনী ল্যাণ্ডলেডী মায়ের মত স্নেহশীল, যে বর্ণবিদ্বেষে নারীত্ব হারায়নি সে-ও আমাদের কৃতজ্ঞতা অর্জন করেছে। নব্যা নারীদের উচ্ছল ও উচ্ছৃঙ্খল চরিত্রগুলিকে অস্বাভাবিক বলি কি করে?—“যথা দৃষ্টং তথা লিখিতং।”

 দিলীপকুমার রায়ের কল্পিতাদের সঙ্গে সত্যকার রক্তমাংসের যে সকল নারী তাঁর লেখায় গ্রথিত হয়ে রইলেন, তাঁদের ছবিই যেন বেশী ফুটেছে। সেই অকালবর্ষার ঘনায়মান্‌ বাদলনিশীথে স্তব্ধ হয়ে যাওয়া কলকণ্ঠীকোকিলা “উমা” বা হাসি, তার মা, তাঁর দেশবিদেশের “দিদি”দের রূপ-মূর্তি আমাদের সঙ্গে পরিচয় জমিয়ে নিয়েছে। তাঁর ঔপন্যাসিক নারীরা অতি সাধারণ।

 দুর্ভাগা ভারতের দুঃখময় যুগান্তের তরুণ অরুণের “তরুণের স্বপ্ন” শুধু তরুণেরই স্বপ্ন হয়ে নিশ্চয়ই থাকবে না; তরুণীদের তরুণ চিত্তকেও ভারতের অদ্বিতীয় তরুণ-বীরের জীমূত-মন্দ্রের আহ্বান দুঃস্বপ্নঘোর কাটিয়ে দিয়ে জীবন-আহবে ঝাঁপ দে’বার জন্য নিশ্চয়ই উদ্বুদ্ধ করে তুলবে,—তা’ সুভাষচন্দ্রের ‘‘তরুণের স্বপ্ন।” তাঁর সে-স্বপ্ন তিনি সফল করে তুলে ‘স্বাধীন ভারতে’ নারীর যুগযুগান্তে হারিয়ে ফেলা স্থানকে পুনরুদ্ধার করে দিয়েও ছিলেন, সেটা নিছক ‘স্বপ্ন’ই নয়;−আশ্চর্য সত্য!!!

 বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়েরপথের পাঁচালী”র অপুর দিদি দুর্গা মেয়েটী আমাদের চোখের জলে স্নাত হয়েছে। অতিবৃদ্ধা