পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৪১৩

 পৃথ্বীশচন্দ্র ভট্টাচার্যের রচনায় মৌলিকতা আছে; বিংশশতাব্দীর নারীকে নিরপেক্ষভাবেই দেখাবার চেষ্টা করেছেন তাঁর “পথ ও পাথেয়” উপন্যাসে, উপন্যাসকারগণ এখন উপন্যাসের অযথা কলেবর বৃদ্ধির জন্য কি প্রতিযোগিতায় নেমেছেন?

 বাংল্যসাহিত্যে সৃষ্টি করা নারীচরিত্র নিয়ে যদি আলোচনা করা যায় তবে কালীপ্রসন্ন সিংহের মহাভারতের চেয়েও বড় এক গ্রন্থ হয়ে উঠে। যে দেশে হাতে হাতিয়ারে কিছু করবার নেই,[১] সে দেশে হাতে কলমে কল্পনাবিলাস না করে লোকে করে কি? সব লেখক লেখিকার নাম দেওয়া সম্ভব নয়; তাঁদের সৃষ্টির আদ্যন্ত পরিচয় দেওয়া আরও কঠিন। অনেক নূতন লেখক ও লেখিকা উদীয়মান হচ্ছেন। তাঁদের রচনা পদ্ধতিতে বৈদেশিক-আধুনিকতা থাকলেও[২] একটা নূতনতর রূপও দেখা দিয়েছে। রুচিপ্রবৃত্তির মধ্যেও রকমফের যথেষ্ট হয়েছে। এক একজন সাহসিকতার সহিত সংমিশ্রিত শক্তির পরিচয় অল্পদিন মধ্যেই দিতে পেরেছেন। মনোজ বসু তাঁদের মধ্যে একজন। তাঁর ‘সৈনিক’ বইখানি ১৯৪১ হইতে ১৯৪৪ অব্দের অতি পরিচিত ঘটনাবলীর একটি মনোজ্ঞ ছায়াছবি;—যা আমরা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করলুম ও করছি, যার বিভীষিকা থেকে মুক্তি পাবার জন্য আমরা তাঁর ‘পান্নালালে’র মতই পালিয়ে বেড়াবার এবং দ্বারিকের মত পাগল হ’বার জোগাড় হয়েছি অথচ যা থেকে চোখ বা মন ফিরিয়ে নেওয়া

  1. সুদীর্ঘ চারি বৎসরাধিক কালের মধ্যে সে দেশের অসদ্ভাবিত পরিবর্ত্তন ঘটিয়া গিয়াছে, আজ হাতে হাতিয়ারের অভাব নেই, আর যত যা নাই থাক্‌!
  2. সমাজেও তাই।