পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট

 আমি পৃথিবীর ইতিহাস লিখতে বসিনি, তবে আজ সমস্ত পৃথিবী তার কমলালেবুর উপমাটী চৌচাপটে মাথায় নিয়ে সেই রকম ক্ষুদ্র হয়েই আমাদের হাতের কাছে এসে পড়েছে; দূরে সরে থাকলে বা ঠেলে রাখলেও আজ আর কারো থেকে কা’রো দূরত্ব রক্ষা হচ্ছে না। দেখা যাচ্চে, নির্বিরোধী থাকবে বল্লেও কোন নৃশংস আক্রমণ তার উপর থেকে বন্ধ থাকছে না; “জানি না” বল্লে তখনই প্রশ্ন ওঠে;—“কেন জান না”? “জান্‌তে চাই না” বল্লে আদেশ আসে, “সে বল্লে তো চলবে না, জান্‌তেই হবে।”

 বিশ্বসংসার আজ আলোড়িত হয়ে চলেছে, কোথায় এর শেষ? এই খণ্ডপ্রলয়ের পর আবার কবে, কখন, কোথা হ’তে নবসৃষ্টির নূতন ধারা আরম্ভ হবে, অথবা আদৌ হবে কি না, তা কেউই জানে না। তবে আশা এই যুগে যুগে যা’ হয়ে এসেছে, আজও তাই হবে, প্রলয়ের পর সৃষ্টি হয়, যুদ্ধের পর ক্ষণিকের জন্যও একটা সাময়িক শান্তি আসে, সেই সময় সেই যুদ্ধ ক্লান্ত জনগণ আত্মবিনোদনের জন্যও বটে এবং বিগত ব্যাপারটাকে সম্যকরূপে প্রণিধান করে নে’বার জন্যও বটে, সৃষ্টিকার্যে নিরত তার প্রধান সহায়ক হয় সাহিত্য। এমনি করেই রামায়ণ, মহাভারত, ইলিয়ডের সৃষ্টি হয়েছিল; এমনি করেই গত যুদ্ধের পর যুদ্ধমান দেশসমূহে বহু ইতিহাস, উপন্যাস, নাটকাদির সৃষ্টি হয়েছিল। এবারের এই পৃথিবীব্যাপী মহাপ্রলয়ের সূচনা সর্বদেশ ও সর্বজাতিকে প্রায় সমসূত্রে নিবদ্ধ করতে অংশতঃ