পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

অগ্নিমিত্রা, সীবল, মহারুহা, অঞ্জলি, অনুলা এবং চারুমতী। অশোককন্যা সঙ্ঘমিত্রা তথাগতের ধর্মের বাণী বহন করে ভারতের কল্যাণদূতীরূপে যেদিন সিংহলে উপস্থিত হলেন, সেদিন সৌভাগ্যক্রমে সিংহলের নারীর চিত্তক্ষেত্র তার ধর্মবীজ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত ছিল, সিংহলের রাজমহিষী অমুলা দেবী পাঁচশত সঙ্গীকে নিয়ে একদিনে বুদ্ধের ধর্মে দীক্ষিত হলেন। ‘দীপবংশ’নামক সিংহলীগ্রন্থে সঘমিত্রা, হেমা এবং অগ্নিমিত্রাকে ত্রিবিধজ্ঞানপারদর্শিনী বলা হয়েছে। সীব এবং মহারুহা সুপণ্ডিতা ছিলেন, তারা বিনয় সূত্রপিটক এবং অভিধর্ম পড়াতেন। অশোকের আর এক কন্যা চারুমতী নেপালে বিহারস্থাপন করেছিলেন এবং বহু নারীকে ধর্মদীক্ষা দিয়েছিলেন। অঞ্জলিনাম্নী ভিক্ষুণী শাস্ত্রজ্ঞা এবং দৈবশক্তিসম্পন্ন ছিলেন। মধ্য এসিয়ার কুচীরাজ্যের বিদুষী রাজকন্যা জীব। উত্তরভারতের এক পরিব্রাজক ভিক্ষু কুমারায়ণের পাণ্ডিত্যে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে পতিরূপে বরণ করেছিলেন। তাদের যোগ্যপুত্র কুমারজীবের নাম সকলেই জানেন। জীব। দুই পুত্রের জন্মের পর সংসার ত্যাগ করে ভিক্ষুণী হন। তাঁর শিক্ষায় কুমারজীব সাতবছর বয়সে বহু শাস্ত্রগ্রন্থ অধ্যয়ন করেন, কিন্তু কুচীরাজ্যের জ্ঞানভাণ্ডার ছেলের পক্ষে যথেষ্ট নয় মনে করে জীবা তাঁকে নিয়ে কাশ্মীরে আসেন। সেখানে শিক্ষা সমাপ্ত করে কুমারজীব কুচীতে অধ্যাপনা আরম্ভ করেন, পরে চীনসম্রাটের আক্রমণে কুচীরাজ্য ধবংস হলে তিনি বন্দীরূপে চীন-রাজসভায় উপস্থিত হন। সেদিন থেকে ত্রিশবৎসর ধরে তিনি চীনের বৌদ্ধ পণ্ডিতদের দীক্ষাগুরু ছিলেন, বহু সংস্কৃত শাস্ত্রগ্রন্থ সংস্কৃত থেকে চীনভাষায়