পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

সাহিত্যে নারী: অস্ত্রী ও সৃষ্টি সমস্যা হয়ে আছেন। মহাবীরের বহুপূর্বে যে সব তীর্থঙ্কর জন্মেছিলেন বলে জৈনদের বিশ্বাস, তাদের মধ্যে প্রথম তীর্থঙ্কর ঋষভদেবের দুই ধোন ব্রাহ্মী এবং সুন্দরী, অন্যতম তীর্থঙ্কর অমরনাথের মা অযোধ্যারাজ সুদর্শনের মহিষী রাণী দেবী প্রভৃতি সুপণ্ডিত। জৈন নারীর নাম পাওয়া যায়। তীর্থঙ্কর অমরনাথের তিন লক্ষ বিশহাজার ভিক্ষুণী শিষ্যা ছিলেন বলে শোনা যায়। অবশ্য এই সব প্রাগৈতিহাসিক যুগের নারীদের সম্বন্ধে সত্যমিথ্যা নির্ণয় করা আজ সম্ভবপর নয়।

 বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্মের প্রাবল্যের যুগেও সকল বিদুষীই কিছু আর সন্ন্যাসিনী হন নি, বিশাখা, সুজাতা প্রভৃতি ধর্মশীলা বিদুষী গৃহস্থ নারীর পরিচয় আমরা জাতকে এবং অন্যত্রও পাই। আবার ঈশ্বরদত্ত ধীশক্তিকে যাহারা পরের ক্ষতির জন্য কাজে লাগাতেন এমন মেয়েরও সে যুগে অভাব ছিল না। মগধেশ্বর নবম নন্দের মন্ত্রী শাকটালের সাতটি মেয়ে–যক্ষা, যক্ষদত্তা, ভূত, ভূতদত্তা, এণিকা, বেণা এবং রেণ শ্রুতিধরী ছিলেন। প্রথমা এক বার,দ্বিতীয়া দুই বার, তৃতীয়া তিন বার, এই ভাবে সপ্তম সাতবার কোনো কিছু শুনলে কণ্ঠস্থ করতে পারতেন। রাজসভায় নূতন কবিদের পুরস্কার দেবার প্রথা ছিল কিন্তু শাকটাল অন্যের সম্মান সহ্য করতে পারতেন না। তার ব্যবস্থা মতো সভায় কোনো নূতন কবিতা পড়া হলেই যক্ষা সেটির পুনরাবৃত্তি করতেন, কবির এবং যক্ষার আবৃত্তি শুনে যক্ষদত্তা, তাদের তিন জনের আবৃত্তি শুনে ভূতা, এইভাবে সাতজন মেয়ে যখন পরে, পরে কবিতাটি আবৃত্তি করতেন তখন সেটিকে পুরাতন এবং বহু প্রচলিত বলে উড়িয়ে দেওয়া হত। বিখ্যাত কবি