পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

অষ্টম শতাব্দী পর্যন্ত চীন রাজ্যের বিদুষী নারীরা শাসন, বিচার প্রভৃতি বিভাগে উচ্চ রাজপদ লাভ করতেন এবং জাতির ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন।

 প্রাচীন কালে যে সব বিদুষী আরব নারীদের পরিচয় পাওয়া যায় তাদের মধ্যে পালমিরার রাণী পূর্বদেশের সম্রাজ্ঞী জেনোবিয়ার নামই সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য। তার সময়ে রোমের রাজসভার চেয়ে তাঁর সভায় অধিকসংখাক জ্ঞানী এবং গুণীর সমাবেশ হয়েছিল, তিনি নিজে জগতের শ্রেষ্ঠ পণ্ডিতদের সঙ্গে জ্ঞানালোচনা করতে ভালো বাসতেন। সম্রাট অরেলিয়ানের সঙ্গে শক্তি পরীক্ষায় জেনোরিয়ার পরাজয় এবং পালমিরার পতন হয়।

 খৃষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে চীনদেশে সম্রাট ‘ফুচিয়ান’ একসময় ‘টুটাও’ নামক এক রাজপুরুষকে কোনো অপরাধের জন্য তাতারের মরুভূমিতে নির্বাসিত করেন। ‘টুটাও’এর বিদুষী পত্নী ‘সু হুই’ তাঁর স্বামীর প্রবাস-দুঃখ ভোলাবার জন্য তাঁর নিজের অবর্ণনীয় বিরহবেদনাকে ছন্দোবদ্ধ একখানি কাব্যে ভাষাদান করেন এবং কাব্যখানি লোকমারফত টুটাওএর কাছে পাঠিয়ে দেন। চীনভাষা না জানায় এই ‘নব মেঘদূত’ থেকে কোনো উদাহরণ দিতে পারা গেল না।

 ভারতবর্ষে আনুমানিক খৃষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে কর্ণাটেশ্বরী বিজয়াঙ্কা সরস্বতীর অবতার এবং বৈদভী রীতির কবিতা রচনায় মহাকবি কালিদাসের সমকক্ষ বলে সম্মানিত হয়েছিলেন। কবি চণ্ডালবিদ্যা সম্রাট বিক্রমাদিত্য এবং কালিদাসের সঙ্গে এক যোগে একটি কবিতা রচনা করে তার তৎকালীন প্রতিষ্ঠার এবং রচনাশক্তির উদাহরণ রেখে গেছেন।