পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

নারীদের রচনা পালিতে এবং পরবর্তী যুগের হিন্দু বৌদ্ধ অধিকাংশ বিদুষী নারীর রচনাই সংস্কৃতে পাওয়া যায়।

 সংস্কৃত কবিদের রচনার নিদর্শন কিছু কিছু পাওয়া গেলেও তাঁদের অনেকেরই সময় নির্ধারিত হয়নি, সুতরাং তাদের কথা পরে একসঙ্গে আলোচনা করব।

 হিন্দু বৌদ্ধ যুগে যারা অন্যান্য প্রাদেশিক ভাষায় কবিখ্যাতি লাভ করেছেন তাদের সম্বন্ধে তৎপূর্বে দু'এককথা বলা দরকার। ভারতবর্ষের অ-সংস্কৃত ভ্রাবিড় ভাষাগুলির মধ্যে তামিল ভাষার ইতিহাস খুব প্রাচীন। তামিল দেশে সর্বশ্রেষ্ঠ বৈষ্ণব ধর্মগুরুদের নাম ছিল আলোয়ার। এই আলোয়ারদের মধ্যে একমাত্র নারী আলেয়ার আণ্ডাল খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে শ্রীবিল্লিপুটুর মন্দিরের পূজারী সুকবি পেরিয়া আলোয়ারের কন্যারূপে জন্মগ্রহণ করেন।

 আণ্ডাল শিশুকাল থেকেই ধর্মপ্রাণা ছিলেন, নারায়ণকে পতিরূপে বরণ করে তিনি চিরকৌমারব্রত গ্রহণ করেন এবং শেষ পর্যন্ত শ্রীরঙ্গমের বিষ্ণুমন্দিরে দেহত্যাগ করেন। তাঁর কবিত্বের খ্যাতি এক দিন তাঁর সাধনার খ্যাতির সঙ্গে সমভাবে দাক্ষিণাত্যে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। তাঁর কবিতার একটি উদাহরণ দিচ্ছি; সমাজের তাড়নায় তাঁর পিতা তাঁর বিবাহ দেবার উদ্যোগ করছেন শুনে তিনি এই কবিতাটি লিখেছিলেন? “বৈদিক ব্রাহ্মণের যজ্ঞের হবি মরুচারী শৃগালের দ্বারা দুষিত হওয়ার মতো আমার এই যৌবন পুষ্পিত শঙ্খচক্রধারী প্রভুকে উৎসর্গিত অর্ঘ্যরূপ এই দেহ, কোনো মর্ত-মানবের সঙ্গে বিরাহ সম্বন্ধে বদ্ধ এবং কলুষিত হবার পূর্বেই,—এমন কি তার