পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৫১

পাই। সেই সব কয়েক ছত্র ক’রে লেখা নিশ্চয়ই তাঁদের সমস্ত লেখার শতাংশের একাংশও নয়, তবু সেই কয়েক ছত্রেই তাঁদের শক্তির সম্বন্ধে আমাদের নিঃসংশয়িত করে এবং অনেক ক্ষেত্রে বিস্মিতও করে থাকে। এই নারীকবিদের মধ্যে কাল হিসাবে ‘চণ্ডাল-বিদ্যার’ নাম সর্বপ্রথম পাওয়া যায়। তিনি নিঃসন্দেহ কালিদাসের যুগে জন্মেছিলেন, সেই যুগ খৃষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতেই হোক্‌, আর খৃষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতেই হোক্‌। ‘চণ্ডালবিদ্যা’ মহারাজ বিক্রমাদিত্যের সভাকবি ছিলেন। নিম্নলিখিত কবিতাটি তিনি, কালিদাস এবং বিক্রমাদিত্য একযোগে লিখেছিলেন ব’লে প্রসিদ্ধি আছে:

“ক্ষীরোদাম্ভসি মজ্জতীব দিবসব্যাপারখিন্নং জগ-
ত্তৎক্ষোভজ্‌, জলবুদ্বুদা ইব ভবন্ত্যালোহিতাস্তারকাঃ।
চন্দ্রঃ ক্ষীরমিব ক্ষরত্যবিরতং ধারাসহস্রোৎকরৈ
রুদ্‌গ্রীবৈ স্তৃষিতৈরিবাদ্য কুমুদৈঃ জ্যোৎস্নাপয়ঃ পীয়তে॥”

 কবিতাটির বিষয়বস্তু ‘জোৎস্না’ বর্ণনা, সারাদিনের কেনাবেচার পরিশ্রমে ক্লান্ত হ’য়ে জগৎ যেন ক্ষীরসমুদ্রে স্নানে নেমেছে তাতে ক্ষুব্ধ সমুদ্রে ফেন বুদ্বুদের মতো রক্তাভ তারকারা দেখা দিয়েছে। চন্দ্র তার সহস্র কিরণ দিয়ে যেন অবিরত সহস্র ধারায় ক্ষীর হ’য়ে ঝরে পড়ছে, আজ রাত্রে উদ্‌গ্রীব তৃষিত কুমুদেরা যেন জ্যোৎস্নার দুগ্ধ পান করছে।’ চণ্ডালবিদ্যার নাম যে বিক্রমাদিত্য এবং কালিদাসের সঙ্গে একত্রে উচ্চারিত হ’ত, এতেই আমরা তাঁর শক্তির এবং প্রতিষ্ঠার পরিচয় পাই। দুর্ভাগ্যক্রমে এঁর লেখা বেশী পাওয়া যায় না।

 পরবর্তী যুগের অধিকাংশ কবিরই সময় স্থির হয়নি, তাঁদের