পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৫
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৫৫

পড়ে বিদুষী কবির লজ্জার অবধি ছিল না, কিন্তু আজ পাঠক পাঠিকার সহানুভূতি স্বভাবতঃই পাণ্ডিত্য-গর্বিতা পত্নীর চেয়ে স্বামীর দিকেই বেশী আকৃষ্ট হয়। এই কবিতার পাঠান্তর কালিদাসের পত্নী ‘নিবিড়-নিতম্বা’ রাজকন্যা বিদ্যোত্তমার নামেও প্রচলিত আছে, সম্ভবতঃ সেটি পরবর্তী যুগের রচনা। বিদুষী রাজকন্যা কমলার (বিদ্যোত্তমার) ঐতিহাসিক অস্তিত্বের কোনো নিদর্শন নেই।

 এঁদের পর খৃষ্টীয় দশম শতাব্দীর মধ্যে আমরা সরস্বতী, সীতা, ত্রিভুবনসরস্বতী এবং সিন্নস্মার রচনা পেয়েছি। কামলীলা, কনকবল্লী, ললিতাঙ্গী, মধুরাঙ্গী, সুনন্দা, বিমলাঙ্গী এবং প্রভুদেবী লাটীর নাম ইতিপূর্বে বা এই সময়ে পাওয়া গেলেও তাঁদের কোনো রচনা পাওয়া যায়নি। লাটী অর্থাৎ গুজরাত দেশীয় প্রভুদেবীই এঁদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ছিলেন, আলঙ্কারিক রাজশেখর তাঁর কবিত্বের এবং পাণ্ডিত্যের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন[১] বলেছেন, ‘তিনি মৃত্যুর পরেও তাঁর কীর্তির জন্য মানুষের হৃদয়ে অমর হ’য়ে আছেন’। তাঁর লেখা নিঃশেষে বিলুপ্ত হ’য়ে যাওয়ার কারণ যাই হোক্, এই ক্ষতিকে সংস্কৃত সাহিত্যের দুর্ভাগ্য ব’লতে হবে। সরস্বতী দেবীর কবিতার একটি উদাহরণ দিচ্ছি:

“পত্রাণি কণ্টক-দুরাসদানি বার্তাহপি নাস্তি
মধুনো রজসান্ধকারঃ।
আমোদমাত্র-রসিকন মধুব্রতেন নালোকিতানি
তব কেতকি দূষণানি॥’’


  1. সূক্তিনাং স্মর কেলীনাং কলানাং চ বিলাসভূঃ।
    প্রভুদেবী কবির্লাঢী গতাহপি হৃদি তিষ্ঠতি॥’’