পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৬৩

হয়েছিলেন। তাঁর এক বোন উপাগ্‌গা ‘নীলি-পাটল’ গ্রন্থ লিখে এবং আর দুই বোন ভল্লী এবং সুরেগা নানা খণ্ডকাব্য এবং কবিতা লিখে খ্যাতি লাভ করে ছিলেন।

 সংস্কৃতে প্রাচীন কবিদের লেখা সম্পূর্ণ কাব্য বা কবিতাসংগ্রহ অল্পই পাওয়া গেছে। রাজপ্রাসাদ থেকে যে সব কাব্য রচিত হয়েছিল, বৈদেশিক আক্রমণের নানা অবস্থাবিপর্যয়ের মধ্যেওসেই রকম কয়েকখানিমাত্র টিঁকে গেছে, রাজসভা থেকে দূরে গ্রামের দরিদ্র নারীর লেখার সে সৌভাগ্য হয়নি। রাজা কৃষ্ণদেবের সময় কুম্ভকারকন্যা মল্লী বা মল্লা অবসর সময়ে তেলুগু ভাষায় রামায়ন লিখেছিলেন। মন্দিরের দেবদাসীরা গত শতাব্দীতেও সংস্কৃতে মৌলিক রচনার জন্য খ্যাতিলাভ করেছেন, সুতরাং হিন্দুরাজত্বের সমৃদ্ধির যুগে রাজান্তঃপুরিকারা যে অনেকেই সুশিক্ষিতা এবং সুকবি ছিলেন তা’তে আশ্চর্য হবার কোনই কারণ নেই। উত্তর ভারতে মুসলমান আধিপত্য সংস্কৃতচর্চায় সর্বত্র বাধা না দিলেও সংস্কৃত ভাষা শিক্ষায় ঐহিক উন্নতির সম্ভাবনা ছিলনা ব’লে জনসাধারণ সংস্কৃতকে পূর্বের সম্মান দিত না। দাক্ষিণাত্যে বিজয় নগরে এবং তাঞ্জোরে দীর্ঘকাল পর্যন্ত রাজানুকূলতায় শিক্ষিত সমাজে নারীদের মধ্যেও সংস্কৃতচর্চা অব্যাহত ছিল। খৃষ্টীয় চতুর্দশ শতাব্দীতে বিজয়নগররাজ বীরকম্পন বা কম্পরায়ের পত্নী গঙ্গাদেবী তাঁর স্বামীর মুসলমানসৈন্যের কাছ থেকে মাদুরা-উদ্ধার উপলক্ষ্য ক’রে মধুরা-বিজয় কাব্য লেখেন, এই কাব্যখানি সম্পূর্ণ পাওয়া গেছে। এই ঐতিহাসিক বীররসপূর্ণ কাব্যে কবি তাঁর যুগকে জীবন্ত কঁরে তুলেছেন অপরূপ বাণীচিত্রে। একটি উদাহরণ