পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

বালিকাবিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন, মহাকালীপাঠশালা তাদেরই অন্যতম। ধর্মপ্রাণা নারীদের কথা বলবার সময় তাঁর সম্বন্ধে বিস্তৃত আলোচনা করা উচিত।

 ঊনবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বিখ্যাতা বিদুষী এবং সংস্কৃত কবি পণ্ডিতা রমাবাই নিজে বাঙ্গালী না হ’লেও বাংলার বধু। ১৮৫৮ খৃষ্টাব্দে ম্যাঙ্গালোরে পণ্ডিত অনন্তশাস্ত্রীর গৃহে তাঁর জন্ম হয়। তিনি বাল্যে পিতার কাছে সংস্কৃত এবং ভারতের কয়েকটি প্রাদেশিক ভাষায় সুশিক্ষিতা হন। ষোলো বছর বয়সে মাতৃপিতৃহীনা হ’য়ে ভাইয়ের সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ ক’রে তিনি স্ত্রীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে বক্তৃতা দেন। কলকাতার এবং ভাটপাড়ার পণ্ডিতেরা তাঁর বাগ্মিতায় এবং কবিত্বে মুগ্ধ হ’য়ে তাঁকে সরস্বতী উপাধি দেন। দ্বারভাঙ্গার রাজা লক্ষ্মীশ্বর সিংহের দ্বারা সম্মানিতা হ’য়ে রমাবাই সংস্কৃতে “লক্ষ্মীশ্বর চম্পুকাব্য’’ রচনা ক’রে তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন, ঐ কাব্যে তাঁর অসাধারণ ছন্দোজ্ঞান এবং অলঙ্কার-নৈপুণ্যের সম্যক্‌ পরিচয় আছে। ভ্রাতার মৃত্যুর পর নিঃসহায়া রমাবাই শ্রীহট্টের উকিল বিপিনবিহারী দাসকে বিবাহ করেন, কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই তাঁর স্বামী মারা যান। অতঃপর এই বিদুষী বিধবা একা ভারতবর্ষের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত নারী শিক্ষা সম্বন্ধে সভা করে বক্তৃতা দিয়ে হিন্দু-সমাজকে সচেতন ক’রে তুলতে লাগলেন। ১৮৮১ খৃষ্টাব্দে তিনি ‘আর্য মহিলা সমাজ’ স্থাপন করেন, একান্ত পরিতাপের বিষয় যে সেই বৎসরই তিনি খৃষ্টধর্মে দীক্ষিতা হন। উত্তেজনার বশে ধর্মত্যাগ ক’রলেও ভারতের অতীত সংস্কৃতির প্রতি আজীবন তাঁর অসীম