পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৭৯

অন্যতম মাগধী প্রাকৃত ‘পালি’ ভাষায় কাব্য রচনা করেন সেই যুগেই অন্যত্র অন্যান্য নারীরা প্রাকৃতে কাব্যরচনা করতেন ব’লে মনে হয়। নিম্নোল্লিখিত কবিদের মধ্যে একমাত্র অবন্তিসুন্দরী ছাড়া আর সকলের কথাই রাজা শাতবাহনের লেখায় পাওয়া যায়, অর্থাৎ তাঁরা গুপ্তযুগের পূর্ববর্তী কালে আবির্ভূতা হয়েছিলেন। যাঁদের লেখা পাওয়া গেছে তাঁরাই প্রাকৃত কবিদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠা ছিলেন কিনা সে কথা নিশ্চয়ই বলা যায় না, তবু তাঁদের রচনা থেকেই আমরা প্রাকৃত কবিতার সম্বন্ধে একটা মোটামুটি ধারণা করতে পারি। তাঁদের নাম অনুলচ্ছী (অনুলক্ষ্মী) অসুলদ্ধী (?), ওন্দিসুন্দরী (অবন্তিসুন্দরী) মাহবী (মাধবী) পহআ (প্রহতা) সসিপ্পহা (শশিপ্রভ), রেবা, রোহা, (রোহিণী?) বদ্ধাবহি (?)। এঁদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাতা ছিলেন কাব্যমীমাংসা-লেখক ব্রাহ্মণ রাজশেখরের ক্ষত্রিয়া-পত্নী চৌহানকুল-মুকুটমণি বিদুষী অবন্তিসুন্দরী। রাজশেখর তাঁর অনুরোধে কর্পূরমঞ্জরী নাটক লিখেছিলেন, তাঁর ভাই ধনপালকেও তিনি প্রাকৃতে কাব্যরচনায় উৎসাহ দিয়েছিলেন। কাব্যমীমাংসায় রাজশেখর প্রামাণ্য ব’লে তিনবার উল্লেখ করেছেন, হেমচন্দ্র ‘দেশীনামমালায়’ অবন্তিসুন্দরীর সঙ্গে তাঁর মতভেদের কথা বলেছেন। তখনকার পণ্ডিত সমাজে তাঁর মত শ্রদ্ধার সঙ্গে গৃহীত এবং বিবেচিত হ’ত এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। তাঁর কবিতার একটি উদাহরণ দিচ্ছি:

“কিং তং পি বীসরিয় নিক্কিব জং গুরু অণস্ম মজ‌্ঝভি।
অহিধাবিউন গহিও তং ওছর-উত্তরীয়াএ॥”

(বিরহিণী ব’লছেন) “হায় নিষ্ঠুর, তুমি কি ভুলে গেছ