পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা চতুর্থ খণ্ড.pdf/৪০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আত্মকথা { গেলাম যে, জীবনে একটা ছত্রও কোন দিন লিখেচি । দীর্ঘকাল কাটলে প্রবালে,--ইতিমধ্যে কবিকে কেন্দ্র করে কি কৰুে নবীন বাঙলা সাহিত্য দ্রুতবেগে সমৃদ্ধিতে ভরে উঠলো, আমি তার কোন খবরই জানিনে । কবির সঙ্গে কোন দিন ঘনিষ্ঠ হবারও সৌভাগ্য ঘটেনি। তার কাছে ব’লে সাহিত্যের শিক্ষা গ্রহণেরও সুযোগ পাইনি, আমি ছিলাম একেবারেই বিচ্ছিন্ন ; এইটা হলে বাইরের সত্য, কিন্তু অস্তরের সত্য সম্পূর্ণ বিপরীত। সেই বিদেশে আমার সঙ্গে ছিল কবির থানকয়েক বই-কাব্য ও সাহিত্য ; এবং মনের মধ্যে ছিল পরম শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস । তখন ঘুরে ঘুরে ওই ক’খান। বই-ই বার বার ক’রে পড়েছি,–কি তার ছন্দ, কটা তার অক্ষর, কাকে বলে আর্ট, কি তার সংজ্ঞা, ওজন মিলিয়ে কোথাও কোন ক্রটি ঘটেছে কি না,--এ সব বড় কথা কখনো চিন্তাও করিনিওসব ছিল আমার কাছে বাহুল্য। শুধু সুদৃঢ় প্রত্যয়ের আকারে মনের মধ্যে এইটুকু ছিল যে, এর চেয়ে পূর্ণতর স্মৃষ্টি আর কিছু হতেই পারে ন! ! কি কাব্যে, কি কথা-সাহিত্যে, আমার ছিল এই পুজি । একদিন অপ্রত্যাশিতভাবে হঠাৎ যখন সাহিত্য-দেবার ডাক এলো, তখন যৌবনের দাবী শেষ করে প্রৌঢ়ত্বের এলাকায় প। দিয়েছি। দেহ শ্রাস্ত, উদ্যম সীমাবদ্ধ—শেখবার বয়স পার হয়ে গেছে । থাকি প্রবাসে, সব থেকে বিচ্ছিন্ন, সকলের কাছে অপরিচিত, কিন্তু আহবানে সাড়া দিলাম,–ভয়ের কথা মনেই হ’ল না । আর কোথাও না হোক, সাহিত্যে গুরুবাদ অামি মানি । —( ‘জয়ন্তী-উৎসর্গ', পৌষ ১৩৩৮) ।